আনন্দে ভাসছে সিলেট
কিশোর ফুটবলারদের আন্তর্জাতিক আসর সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবল। যেখানে অংশ নিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার একঝাঁক কিশোর ফুটবলার। মঙ্গলবার দক্ষিণ এশিয়ার সেরা কিশোর ফুটবল দল এখন বাংলাদেশ। ভারতকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বাংলাদেশের কিশোর টাইগাররা। তাই আনন্দের জোয়ারে এখন ভাসছে সিলেট।
খেলা দেখতে নগরীতে শুধু জ্যাম নয়, শুরু হয় হাজার হাজার মানুষের কোলাহল। করতালি আর `বাংলাদেশ, বাংলাদেশ` স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছিল পুরো স্টেডিয়াম এলাকা। যেন সত্যিকারের উৎসবের চেহারাই পেয়েছিল সিলেট জেলা স্টেডিয়াম।
ভারতের বালক ফুটবলারদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মুকুট ছিনিয়ে নিলেন সুনামগঞ্জের ছেলে ফয়সাল আহমদ। দুই দুইটি বল সাহসের সঙ্গে ফিরিয়ে দিয়ে ভারতের স্বপ্ন গুড়িয়ে দিলেন ফয়সাল। তাই হাজার ২৫ দর্শকের করতালি ও উচ্ছাসে ভাসছে সিলেট।
বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হওয়ার পরপরই সিলেট নগরের বিভিন্ন অলিগলি থেকে বিজয় মিছিল বের হতে দেখা গেছে। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে মিছিলের পর মিছিল হচ্ছে নগরীতে। সবার মুখে একই সুর বাংলাদেশ বাংলাদেশ। ফুটবলেও ধরাশায়ী ভারত।
জাতীয় দল, অনূর্ধ্ব-১৯, অনূর্ধ্ব-১৬ কিংবা অনূর্ধ্ব-১২ এ সব ক্যাটাগরি দিয়ে হয়তো ফুটবলের লেভেলটা ভাগ করে দেয়া যায়। তবে দেশপ্রেম কিংবা ভক্তদের সমর্থনকে ভাগ করা যায় না। মঙ্গলবার সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে যেন এ কথারই প্রমাণ পাওয়া গেল।
হোক না কিশোরদের ফুটবল, কিন্তু সেই ফুটবল উপভোগ করতেই, বিশেষত ভারতের বিপক্ষে স্বাগতিক বাংলাদেশের কিশোর ফুটবলারদের সমর্থন যোগাতে স্টেডিয়ামের গ্যালারি পূর্ণ করে ফেললেন স্থানীয় দর্শকরা। এদের মধ্যে যেমন কিশোর-তরুণ-তরুণীরা রয়েছে, তেমনি রয়েছেন বয়স্করাও। বয়সের ভেদাভেদ ভুলে সকলেই এদিন মেতে উঠেছেন ফুটবল উৎসবে। স্টেডিয়ামের আশপাশের বাসা-বাড়ির ছাদেও প্রমীলা দর্শকদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সিলেটবাসী ফুটবল প্রিয়। যে কারণে সিলেটকে ফুটবলের `সেকেন্ড হোম` বলে বরাবরই অভিহিত করে আসছেন বাংলাদেশের ফুটবলের শীর্ষ কর্মকর্তারা। সেই কথার যথার্থতা প্রমাণ করলো দর্শকেরা। সেই বেলা ২টা থেকেই টিকেট কাউন্টারগুলোর সামনে ভিড় করেছে ফুটবলভক্তরা।
স্টেডিয়ামের চর্তুদিকেই জ্যাম লেগে ছিল দুপুর থেকেই। যারা ম্যাচ শুরুর খানিক আগে স্টেডিয়ামে পৌঁছেছেন তারা টিকেট হাতে নিয়েই দ্রুত ছুটেছেন প্রবেশ পথের দিকে। শেষ অব্দি ভক্তদের ভিড়ে এক সময় কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামটি।
দর্শকদের এমন ভিড় বাড়ায় ট্রাফিক পুলিশ কিংবা স্টেডিয়ামের আশপাশের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে একটু বেশি শ্রম দিতে হয়েছে। তবে তৃপ্তির হাসি ফুটেছে আয়োজকদের মুখে! কেননা, দর্শকহীন কোনো আসর যে জৌলুস ছড়াতে পারে না।
সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে গত ৯ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ছয় দেশের অংশগ্রহণে কিশোর ফুটবলারদের এই আসর। স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়া আসরে অংশ নিয়েছে ভারত, নেপাল, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা।
ছামির মাহমুদ/এআরএ/এমআরআই