প্রাইভেট না পড়ায় ৪২ শিক্ষার্থীকে ফেল করালেন শিক্ষক
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় প্রাইভেট না পড়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ১০ম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষায় ৪২ জন শিক্ষার্থীকে গণিত বিষয়ে ফেল করিয়েছেন শিক্ষক।
সেইসঙ্গে ফেলকৃত শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার এসব অভিযোগ করে সরিষাবাড়ী পৌরসভার বাউসি বাঙালি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, বাউসি বাঙালি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৫৪ জন শিক্ষার্থী এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ওই বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক মশিউর রহমান ও হায়দার আলী শিক্ষার্থীদের গণিত বিষয়ে প্রাইভেট পড়তে চাপ দেন। অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়লেও ৪২ জন শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়েনি। সম্প্রতি নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলে দেখা যায়, ওই ৪২ জনই গণিত বিষয়ে ফেল করেছে। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ করলেও তা দেখানো হয়নি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোলায়মান, হৃদয় আহম্মেদ, তামিম মাহমুদ, হৃদয় হাসান, চম্পা, মুক্তিরাণী ও সুইটি জানায়, গণিতে প্রাইভেট না পড়ায় ফলাফল প্রকাশের আগে শিক্ষক মশিউর রহমান ও হায়দার তাদের কাছে টাকা চান। পরে ফলাফলের পর দেখা যায় গণহারে ফেল করানো হয়েছে।
এদিকে তাদের এসএসসির ফরম পূরণের সুযোগ দিতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত টাকা দাবি করছে। প্রতিজন ১০ হাজার করে টাকা দিলে প্রধান শিক্ষক গোপনে ফরম পূরণ করতে দেবেন বলেও তারা অভিযোগ করে।
জানা যায়, এবারের এসএসসি ফরম পূরণে বোর্ড নির্ধারিত ফি বিজ্ঞান বিভাগে ১ হাজার ৮০০ টাকা এবং মানবিক ও বাণিজ্যিক বিভাগের এক হাজার ৬৮০ টাকা। কিন্তু নিয়ম লঙ্ঘন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে টাকা আদায় করছে। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিভাবক সুজন মিয়া জানান, তার মেয়েকে গণিতে এক নম্বর কম দিয়ে ফেল করানো হয়েছে। এখন ফরম পূরণ করতে উৎকোচ দাবি করছেন শিক্ষক।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, এসব অভিযোগ সঠিক নয়। চ্যালেঞ্জ করা খাতা দেখলে আরও কম নম্বর পাবে তারা।
বাউসি বাঙালি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা বলেন, নির্বাচনী পরীক্ষায় সব বিষয়ে যারা পাস করেছে তাদের ফরম পূরণ করানো হচ্ছে। যারা একটি বিষয়ে ফেল করেছে তারা সে সুযোগ পাবে না। বখাটে শিক্ষার্থীরা বানোয়াট কথা বলছে। তাদের অভিযোগ মিথ্যা।
এএম/পিআর