বিদ্যালয়ের মাঠে পশুর হাট
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার কদমতলি হাসান পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসছে গবাদি পশুর হাট। সপ্তাহের প্রতি রোববার এই পশুর হাট বসার কারণে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাঠদান।
এতে বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রায় ৭ শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যালয়ে যাতায়াত এবং ক্রীড়াচর্চায় শিক্ষার্থীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কদমতলি হাসান পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৮৬ সাল থেকেই সপ্তাহের রোববার বিদ্যালয় মাঠে বসছে পশুর হাট। ফলে মাঠজুড়ে রয়েছে গরু-ছাগলের বর্জ্য আর সৃষ্টি হয়েছে রকমারি গর্ত আর নালা-নর্দমা। শ্রেণিকক্ষের আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে পশুর মল ও খড়ের স্তূপ।
অভিভাবকদের অভিযোগ, ঘাটাইল উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট এই কদমতলি স্কুল মাঠ। শুধু সপ্তাহের রোববার হাটটি বসলেও অনেক গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া কেনা বেচা হয় এই হাটে। তবে বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে সপ্তাহের ছয়দিনই চলে শিক্ষা কার্যক্রম। ফলে পরদিন অর্থাৎ সোমবার স্কুল খুললেই শিক্ষার্থীদের জন্য রীতিমতো কষ্টকর হয়ে উঠছে স্কুলে যাতায়াত। খেলাধুলা তো দূরের কথা, মাঠ পার হয়ে স্কুলের বারান্দাতে স্বাভাবিকভাবে হাঁটা-চলা দুষ্কর।
এ কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হওয়াসহ রীতিমত স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। ওই হাটের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশেও বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
কদমতলি হাসান পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র মিয়াদসহ কয়েকজন জানায়, বিদ্যালয়ের মাঠে পশুর হাট থেকে সৃষ্ট কাদার কারণে আমরা খেলাধুলা করতে পারি না। ১০ম শ্রেণির ছাত্র সানোয়ার হোসেন সানি জানায়, কাদা ও পশুর মলের দুর্গন্ধে ক্লাসে থাকা খুবই কষ্টকর।
কদমতলি হাসান পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, ১৯৮৬ সালে কদমতলি হাটটি প্রতিষ্ঠিত হয়। হাট প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নিয়মিত বিদ্যালয় মাঠে এই পশুর হাটটি বসছে। সম্মিলিতভাবে এলাকাবাসী হাটটি পরিচালনা করে থাকেন। ২০১৫ সালের ৪ মার্চ হাটটি অন্যত্র স্থানান্তরের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছিলাম। তবে এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এ প্রসঙ্গে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা আহমেদ বলেন, স্কুল মাঠে হাট বসানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরিফ উর রহমান টগর/এএম/এমএস