ত্রুটি না হওয়া পর্যন্ত ইভিএম থেকে সরছে না নির্বাচন কমিশন
নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ইভিএমের ত্রুটি প্রমাণিত না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন এটি চলমান রাখবে। রোববার সকালে বিএনপি নেতাদের দেয়া স্মারকলিপি গ্রহণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর এই স্মারকলিপি দেয় নগর বিএনপি।
তাতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম এবং গায়েবি মামলা দায়ের ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-হয়রানি বন্ধ ছাড়াও পক্ষপাতী মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার দাবি করে বিএনপি।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন কোন জেলায় ইভিএম ব্যবহার করা হবে তা লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। সেখানে রাজশাহী নাম নাও উঠতে পারে। তিনি বলেন, ইভিএম মেলা অনেক আগের পরিকল্পনা। এটি নির্বাচনী ষড়যন্ত্র নয়। যারা অভিযোগ করছে, সেই যুক্তফ্রন্ট গঠনের অনেক আগেই থেকেই ইভিএম নিয়ে কাজ শুরু করেছে কমিশন।
অন্যদিকে এ নিয়ে মালোপাড়া এলাকায় অবস্থিত নগর বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন নেতারা।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, নগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, নগর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন বক্তব্য দেন। সেখানে বিএনপি নেতারা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ আনেন।
নেতারা বলেন, সরকারি নিপীড়ন ও পুলিশি অপতৎপরতায় আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি এমন কি সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার অধিকার থেকে বঞ্চিত রাজশাহী বিএনপি।
গত ২৭ অক্টাবর রাজশাহীতে ইভিএম প্রদর্শনী আয়োজনে হতাশ এবং ক্ষুব্ধ হয়েছে বিএনপি। এ কথা জানিয়ে নেতারা বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপি ইভিএম ব্যবহারে জটিলতা, অস্বচ্ছতা ও পক্ষপাতিত্বের নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে। তারপরও রাজশাহীতে এটি প্রদর্শিত হওয়ায় আমরা ক্ষুদ্ধ। অনেক আগেই বিশ্বের বহু উন্নত দেশ ইভিএম ব্যবহার বন্ধ করেছে।
তারা আরও বলেন, রাসিক নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের অভিজ্ঞতাও সুখকর নয়। অন্যান্য এলাকার নির্বাচনেও একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। এসব নির্বাচনে স্বচ্ছতা, ত্রুটিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য ভােটগ্রহণ এবং ভােটগণনা দ্রুত সম্পন্ন করার ঘাষণা এসব কাজে আসেনি। এমনকি ইভিএম ব্যবহার নিয়ে খোদ নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যেও মতপার্থক্য রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনকে তফশিল ঘোষণার পূর্বেই সকল রাজনৈতিক দলের জন্য লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার আহ্বান জানান বিএনপি নেতারা।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপি নেতারা। তারা বলেন, রাসিক নির্বাচনে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা সরাসরি একজন প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে
নানাবিধ অনিয়ম করেছেন।
রাসিক নির্বাচনের পর থেকে, রাজশাহী নগর ও জেলার ছয়টি আসনে এ পর্যন্ত ৩০টির বেশি গায়েবি মামলা হয়েছে। ১২০ জনকে এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রায় আড়াই হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।
ফেরদৌস/এমএএস/আরআইপি