আ.লীগ সরব হলেও এখনও নীরব বিএনপি
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ডামুড্যা, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জ নিয়ে গঠিত শরীয়তপুর-৩ আসন এখন মুখরিত। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপের পাশাপাশি বাড়ছে লবিং-তদবির। নির্বাচনী এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের প্রচার প্রচরাণা এবং এলাকার গুরুত্বপূর্ণ যায়গায় ব্যানার-ফেস্টুন থাকলেও নীরবে কাজ করে যাচ্ছে বিএনপি।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় ও দলিয় সূত্র জানায়, ডামুড্যা, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকা শরীয়তপুর-৩ আসন গঠিত। এ আসনটিতে মোট ভোটার দুই লাখ ৩৮ হাজার ৯৮৫ জন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে এ আসন থেকে নির্বাচিত হন দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ২০১১ সালে আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুর পর শূন্য আসনে উপ-নির্বাচনে তার ছেলে নাহিম রাজ্জাক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারও নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এবারও তিনি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী।
এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রীর ছেলে ও শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা শিকদার ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বাহাদুর বেপারী।
নির্বাচনী রাজনীতির ইতিহাস বিশ্লেষণে এ আসনটিতে আওয়ামী লীগই বেশির ভাগ বিজয়ী হয়েছে। তবে এবার এতে ভাগ বসাতে পিছপা হচ্ছে না বিএনপিও। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আফজাল হোসেন সবুজ, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রায়ত সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য কেএম হেমায়েত উল্যাহ আওরঙ্গজেবের স্ত্রী অ্যাডভোকেট তাহমিনা আওরঙ্গ ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহমেদ আসলাম মনোনয়ন চাইবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহমেদ আসলামকে ছাড়া মাঠে তেমন কাউকে দেখা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে এই আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আবদুল হান্নান উকিল ও ম.ম. ওয়াসিম।
অন্য দলগুলোর এ আসনে নির্বাচনী কোনো তৎপরতা নেই।
স্বাধীনতার পর এই আসনে জাতীয়পার্টি থেকে এমএ রেজা ও একবার বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বাকি সবগুলো নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে।
এদিকে ক্ষমতাশীন হওয়ায় মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগে কোন্দল বাড়ছে। বিশেষ করে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাই করাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব সাঈদ আহমেদ আসলাম নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময় উঠান বৈঠকসহ বিএনপির সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলের বর্তমান ও নতুন সদস্যরা মনোনয়ন পাওয়ার দাবিদার। তবে কিছুটা হলেও এগিয়ে আছেন সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাহিম রাজ্জাক। যদিও আরো কয়েকজন নেতা মনোনয়ন পেতে উঠে পড়ে লেগেছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা বলেন, আমরা মার্কার পাশাপাশি ব্যক্তিকেও বেছে নেব। আমাদের পাশে যে সব সময় থাকে তাকে নিয়েই নির্বাচনের প্রার্থিতা চাইব।
এই আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আবদুল হান্নান ও মুন্সি মো. ওয়াসিম খোকন। জাতীয় পার্টির তেমন কোনো কার্যক্রম শরীয়তপুর-৩ আসনে চোখে পড়ার মতো নয়। তবে নেতাদের দাবি, তারা বিভিন্ন সময় সভা করেন। নেতা কর্মীদের খোঁজ খবর নেন।
জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত নির্বাচনে জাতীয় পার্টি নির্বাচন করার জন্য মননোয়ন পত্র জমা দেয়। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মননোয়ন পত্র প্রত্যাহার করা হয়। এবার জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে নির্বাচন করবে। তারা এই আসনকে জাতীয় পার্টির আসন হিসেবে ঘোষণা করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
অন্যান্য দলের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ হানিফ মিয়া। তিনি বলেন, আমি শরীয়তপুর-৩ আসন থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। যদি সেখানে আমার নাম ঘোষণা হয় তাহলে আমি ইসলামের সু-মহান আদর্শে নবীর প্রদর্শিত পথে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে জনগণের মন রক্ষা করে কামিয়াত হওয়া চেষ্টা করবো।
এফএ/আরআইপি