ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নৌকায় আসাদ-আয়েন, ধানের শীষে মিলন

নিজস্ব প্রতিবেদক | রাজশাহী | প্রকাশিত: ০৩:১৫ পিএম, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। সরকারের বিরোধীপক্ষ বিএনপি নেতৃত্বাধীন নির্বাচনী জোটের প্রার্থী হতে পারেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন। এ তিনজনের বাইরে আরও এক ডজন নেতা এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন।

নির্বাচনী এলাকায় জনসংযোগ বাড়িয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। বিভিন্ন এলাকায় শোভা পাচ্ছে প্রচারপত্রও। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকার চারপাশ ঘিরে থাকা এই আসনটি বরাবরই রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়ে আসছে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার এই আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। এরই মধ্যে নির্বাচনী এলাকায় আসাদ আলাদা বলয় তৈরি করেছেন। প্রায় প্রতি দিনই কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে যাচ্ছেন ভোটের প্রচারে। থেমে নেই সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের প্রচারণাও।

জানা গেছে, ২০০৮ সালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন থেকে পবা এবং বাগমারা থেকে মোহনপুর উপজেলা বাদ দিয়ে রাজশাহী-৩ আসন গঠন করা হয়। নির্বাচনী এলাকার বিস্তৃতি তিন পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়ন নিয়ে। ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই আসন ছিল বিএনপির দখলে। ২০০৮ সালে রাজশাহী সদর আসন থেকে আলাদা হওয়ার পর দুই মেয়াদে এই আসন চলে যায় আওয়ামী লীগের দখলে।

এই আসনে ২০০৮ সালে বিএনপি নেতা কবির হোসেনকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নির্যাতিত সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন। তবে মেরাজ মোল্লা মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আয়েন উদ্দিনের প্রায় ৭২ হাজার ভোটে হেরে যান।

আয়েন উদ্দিন এবারও এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে দলের মনোনয়ন চাইছেন সাবেক সংসদ সদস্য মেরাজ উদ্দিন মোল্লাও। এর সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন জেলার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।

নৌকার মাঝি হতে চান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি বেগম আখতার জাহান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আলফোর রহমান, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি রবিউল আলম বাবু এবং পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন আলী।

তৃণমূল নেতারা বলছেন, মনোনয়ন যুদ্ধ হবে আয়েন ও আসাদের মধ্যে। নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় আয়েন উদ্দিনের পাল্লা ভারি। তবে নানান কারণে বিতর্কিত আয়েনের গলার কাঁটা হতে পারেন আসাদ। এরই মধ্যে আসাদ এলাকায় শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। হাইকমান্ডের সবুজ সংকেতে তিনি জনসংযোগও বাড়িয়েছেন এলাকায়।

অন্যদিকে,এই আসনে বিএনপি বা তার রাজনৈতিক জোটের প্রার্থী হতে পারেন দলটির নগর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন। রাজশাহী মহানগর এলাকার বাসিন্দা মিলন দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকায় সক্রিয় রয়েছেন। এরই মধ্যে নিজস্ব অবস্থানও পোক্ত করেছেন তিনি।

তবে ধানের শীষের টিকেট পাওয়া তার জন্য খুব একটা সহজ হবে না। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট কামরুল মনির, রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হানুল হক রায়হান। এদের মধ্যে রায়হানুল হক নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা।

তৃণমূল নেতাদের ভাষ্য, গত তিন নির্বাচনে বিএনপির রাজনৈতিক মিত্র জামায়াতের সঙ্গে এই আসন নিয়ে ভাগাভাগিতে যেতে হয়েছে বিএনপিকে। এবার ওই আসনে জামায়াতের শক্ত কোনো প্রার্থী নেই। তাছাড়া সদ্য গঠিত যুক্তফ্রন্টেও নেই জামায়াত। এর বাইরে জোটের অন্য দলগুলোরও শাক্তিশালী প্রার্থী নেই এখানে। ফলে বিএনপির প্রার্থীই জোটের হয়ে প্রার্থীতা করবেন।

নেতারা আরও বলেন, এই আসনে মিলন দলের প্রার্থী হচ্ছেন। হাইকমান্ড থেকে সবুজ সংকেতও পেয়েছেন তিনি। আর এরপর থেকেই ভোটের মাঠে সক্রিয় মিলন।

এ আসনে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্র জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলের নগর সভাপতি শাহাবুদ্দিন বাচ্চু। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আয়েন উদ্দিনের কাছে তিনি হেরে যান। ভোটের পর থেকে এলাকা ছাড়া বাচ্চু সম্প্রতি এলাকায় ফিরছেন।

তবে নিজের দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদী সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন। তিনি জানান, তিনি এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তিনিই আবার দলীয় মনোনয়ন পাবেন।

আয়েন উদ্দিন বলেন, পারিবারিকভাবে আমরা আওয়ামী লীগ করি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও ছিলাম। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কারাবরণ করেছিলাম। সাড়ে ৩ বছর পর কারামুক্ত দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বিজয়ী হয়েছি।

অন্যদিকে দল চাইলে নৌকার মাঝি হবেন বলে জানিয়েছেন আসাদুজ্জামান আসাদ।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন জানান, দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশ পেয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই এলাকায় রয়েছেন তিনি। তৃণমূল নেতাকর্মীরাও তার পাশে রয়েছে। সাধারণ জনগণ ক্ষমতাসীনদের অপশাসন থেকে মুক্তি পেতে তাকেই ভোট দেবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/পিআর

আরও পড়ুন