এবার শামসুলের পাশে এসপি তানভীর আরাফাত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া নাজমুলের পর এবার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাওয়া আরেক মেধাবী শিক্ষার্থী শামসুল ইসলামের পাশে দাঁড়িয়েছেন কুষ্টিয়ার মানবিক পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাত।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ছেলে শামসুল ইসলাম এ বছর বরিশাল মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তার মেধা তালিকায় ক্রমিক নাম্বার ১৭৫০।
শামসুল ইসলামের মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল দারিদ্র্য। পরিবারের অভাব ও সকল প্রতিকূলতাকে জয় করে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপে পৌঁছালেও তার ভর্তি নিয়ে শঙ্কায় ছিল পরিবার।
সে স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসলেন পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত। রোববার তিনি তার কার্যালয়ে ডেকে শামসুল ইসলামকে মেডিকেলে ভর্তির জন্য নগদ ১৫ হাজার টাকা সহযোগিতা করেন। এ সময় শামসুলের বাবা ও মা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, গ্রামের দরিদ্র মেধাবীরাই কেবল তাদের নিরন্তর প্রচেষ্টায় সফলতা লাভ করে। সাময়িক সময়ের জন্য দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে হবে। অর্থাভাবে কোনো মেধাবীর পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে এটা আমার সহ্য হয় না। মায়া লাগে। তাই আমি সামান্য চেষ্টা করি তাদের সহযোগিতা করার। তারাই একদিন সত্যিকারের মানুষ হয়ে সমাজকে আলোকিত করে তুলবে।
শামসুল ইসলাম দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর আতিয়ার রহমান ও রকেনা খাতুন দম্পতির ছেলে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে শামসুল দ্বিতীয়। দরিদ্র কৃষক আতিয়ার রহমানের সংসারে নিত্য অভাব অনটনের মধ্যে থেকেও পরিশ্রম ও একাগ্রতায় এ বছর শামসুল ভর্তি পরীক্ষায় বরিশাল মেডিকেল কলেজে চান্স পায়। তার বাবা কৃষি কাজ করে পরিবারের ভরণপোষণ ও সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছিলেন। এরপরও ধার দেনা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা করাচ্ছেন। জীবন সংগ্রামের টানাপড়েনের মধ্যেও অদম্য মেধাবী ছাত্র শামসুল সাগরখালী কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
সাগরখালী কলেজের অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম বলেন, ছেলেটি ভীষণ মেধাবী। এখন অর্থাভাবে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে। সকলের সহযোগিতা পেলে ছেলেটি তার স্বপ্নপূরণ করতে পারবে।
শামসুল ইসলাম বলেন, বরিশাল মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পরে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। কীভাবে ভর্তি হবো, কীভাবেই বা পড়ালেখা করবো। অনেক টেনশনের মধ্যে ছিলাম। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে কুষ্টিয়ার এসপি আমাকে ডেকে পাঠান এবং মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার জন্য ১৫ হাজার টাকা দেন। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আল-মামুন সাগর/আরএআর/জেআইএম