ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

পদ্মায় জেলেদের জালে মারা যাচ্ছে মা ইলিশ

জেলা প্রতিনিধি | ফরিদপুর | প্রকাশিত: ০৫:০৫ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০১৮

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ নদে অসাধু জেলেরা সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুযোগ পেলেই মা ইলিশ শিকারের জন্য নদীতে নামছেন। নদীতে সব সময় অভিযান বন্ধ থাকার পরও জেলেরা অবৈধ কারেন্টজাল দিয়ে ইলিশ শিকার করছেন। এ দিকে ইলিশ রক্ষায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১৭ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেছে জেলা প্রশাসন। এসময় বিপুল পরিমাণ কারেন্ট জাল ও ইলিশ উদ্ধার করা হয়।

ইলিশের এই প্রজনন মৌসুমে নির্বিঘ্নে যেন ডিম ছাড়তে পারে, সেজন্য ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে ২২ দিন। কিন্তু সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্তেও থেমে নেই ইলিশ শিকার।

পদ্মার চরাঞ্চলের দুর্গম চর এলাকা সংলগ্ন পদ্মা নদীতে অনেকটা গোপনেই জেলেরা ব্যস্ত থাকে ইলিশ শিকারে। আবার প্রকাশ্য বাজারে বিক্রি করতে না পারায় নদীর পাড় থেকেই মানুষের কাছে বিক্রি করছে শিকারকৃত ইলিশ।

নিধনকৃত মা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে একশ থেকে দেড়শ’ টাকা কেজি দামে। সস্তা দামে ইলিশের লোভে বিভিন্ন শ্রেণির লোকজন জড়ো হচ্ছে পদ্মা পাড়ের কাঁশবনের ঝোপে। ব্যাগ বোঝাই করে ইলিশ ক্রয় করে মোটরসাইকেল বা অটোযোগে বাড়ি ফিরছেন তারা।

ilsha

সরেজমিনে পদ্মার পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, নিষিদ্ধ মৌসুমে ইলিশ শিকার বন্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে পদ্মায়। কিন্তু পদ্মা নদীর সীমানা বৃহৎ থাকায় অভিযানের ট্রলার একদিক থেকে অপরদিকে যেতে প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লেগে যায়। অসাধু জেলেরা এরই মধ্যে ছোট ছোট নৌকা নিয়ে কৌশলে গভীর রাতে ও খুব ভোরে পদ্মার বিভিন্ন এলাকায় ইলিশ শিকার করে যাচ্ছে। এছাড়াও ইলিশের জাল নদীতে ফেলে কৌশলে জালটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পানিতে লুকিয়ে রেখে মাছ শিকার করতেও দেখা যায়।

সদরপুর উপজেলার দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া, আকোটেরচর ও শয়তানখালী এলাকার চর সংলগ্ন পদ্মা নদীতে জেলেরা ইলিশ শিকার করে থাকে। চরাঞ্চলের এই পদ্মার পাড়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইলিশ খুচরা বিক্রি হতে দেখা যায়।

একাধিক জেলের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, বিভিন্ন সোর্স এর মাধ্যমে অভিযানের সংবাদ পাওয়া যায়। তাছাড়া সব সময় ইলিশ পাওয়া যায় না। এখন এক ঘণ্টা নদীতে জাল ফেললেই সহজেই ইলিশ পাওয়া যায়। অনেক সময় ধরা খেয়ে জেলেও যেতে হয়।

সূত্র জানায়, নদীতে একাধিক অভিযান না থাকার সুযোগে জেলেরা খণ্ডকালীন সময়ে নদীতে নেমে পড়ে। এছাড়াও ছোট ছোট নৌকায় বড় ইঞ্জিন ব্যবহার করছে। তাদের গতি দ্রুত থাকায় অভিযানের ট্রলার দেখলেই তারা ইঞ্জিন চালু করে দ্রুত গতিতে জাল ফেলে পালিয়ে যায়। তাদের নদীতে ফেলানো কারেন্ট জালে জড়িয়ে পড়ে ইলিশ। এতে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ ডিম না ছাড়তে পেরে নদীতেই মারা যাচ্ছে। মা ইলিশ রক্ষার জন্যে পদ্মা নদীতে সিবোর্ড, একাধিক অভিযান দল অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন সুধীমহল।

jagonews

এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাপ্পি কুমার দাশ জানান, নদীতে অব্যাহত অভিযানের জন্য একটি সিবোট দরকার। জেলেদের ধরতে আমরা যে নৌযান ব্যবহার করি তার চেয়ে জেলেদের নৌযানের গতি অনেক বেশি থাকে। ফলে আমরা অভিযানে নামলেই তারা দ্রুত পালিয়ে যায়। তিনি জানান, তারপরও অভিযান অব্যাহত রেখেছি।

ইলিশ রক্ষা অভিযানের দায়িত্বে থাকা ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল হাসান সোহাগ জানান, সদরপুর উপজেলা অংশের পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১৭ জেলেকে আটক করা হয়। পরে প্রত্যেক জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া উদ্ধারকৃত বিপুল পরিমাণ কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং ইলিশগুলো এতিমখানা ও মাদরাসায় প্রদান করা হয়।

বি কে সিকদার সজল/এমএএস/আরআইপি

আরও পড়ুন