ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কম্পিউটার শিখতে গিয়ে জেএমবির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে বাবু

নিজস্ব প্রতিবেদক | বরিশাল | প্রকাশিত: ০৮:৫৬ পিএম, ০১ অক্টোবর ২০১৮

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দক্ষিণাঞ্চলে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। সহিংস কোনো ঘটনার মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর আবার নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়াই ছিল জেএমবি সদস্যদের লক্ষ্য।

তবে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর সতর্কতা ও জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কারণে জঙ্গিদের সেই চেষ্টা বাব বার লক্ষভ্রষ্ট হচ্ছে। গত একমাসে র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ৪ সদস্যকে। এরমধ্যে জেএমবি’র সামরিক শাখার এক সদস্যও রয়েছে। গ্রেফতারের সময় জেএমবির সদস্যদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত বিভিন্ন ধরনের ইসলামী জিহাদি বই।

বরিশাল র‌্যাব-৮ এর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার রাতে বরগুনা পৌরসভা এলাকার উকিল পট্টি ও বাথালি পট্টি থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ২ জন সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৮। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মো. মেহেদী হাসান ওরফে রাসেল ওরফে হাসান (৩৫) এবং একই জেলার কুমারখালী গ্রামের মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে আবু সালেহ সিকদার ওরফে আব্দুল্লাহ (৩০)। এ সময় আটক মেহেদী হাসানের কাছ থেকে বিদেশে তৈরি একটি রিভলবার, ৪ রাউন্ড গুলি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত বিভিন্ন ধরনের ইসলামী জিহাদী বই উদ্ধার করে র‌্যাব।

এর আগে গত শনিবার রাতে বরিশাল নগরীর জিয়া সড়ক একতা সরণী থেকে জিহাদি লিফলেট এবং বিদেশি অস্ত্র ও গুলিসহ জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য আতিকুর রহমান বাবুকে (২৪) আটক করে র‌্যাব-৮। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী বরগুনা থেকে অপর দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। বাবু বরগুনা সদর উপজেলার রায়ভোগ মোড়খালী গ্রামের মৃত গোলাম মাতুব্বরের ছেলে।

বরিশাল র‌্যাব-৮ এর কার্যালয় থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বরগুনার উকিল পট্টিতে গত ১০ বছর ধরে মেহেদী হাসান একটি কম্পিউটার এবং ফটোকপির দোকান পরিচালনা করছে। কম্পিউটার প্রশিক্ষণের নামে নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রপন্থি সদস্যদের সঙ্গে তার যোগাযোগ স্থাপন হয়। তার দোকানটি প্রশিক্ষণ এবং সমন্বয়ের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। সে নিজেও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। সে উগ্রপন্থী ভিডিও, ওয়াজ ও তথ্যাদি নিষিদ্ধ ঘোষিত সদস্যদের মুঠোফোনে সরবরাহ করত। নিষিদ্ধ ঘোষিত দলের জন্য মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা আদায় করত সে। গত রোববার রাতে উকিলপট্টি থেকে মেহেদীকে গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয় তার দলের অপর সদস্য আব্দুল্লাকে। এর আগে গত শনিবার রাতে জেএমবির সামরিক শাখার সক্রিয় সদস্য আতিকুর রহমান বাবুকে ৬ রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ৩৫৫টি জিহাদি লিফলেট, নিষিদ্ধ ইসলামী জিহাদি বইসহ আটক করে র‌্যাব।

Arrest-JMB-Activites

র‌্যাব জানায়, বরগুনার উকিলপট্টি এলাকার একটি দোকানে কম্পিউটারে শিখতে গিয়ে জেএমবির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে বাবু। সে চাঁদা দিয়ে জেএমবি’র সদস্য হয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নেয় এবং তার কাজ ছিল বিভিন্ন জেলায় ঘুরে সংগঠনের জন্য সাথি সংগ্রহ করা।

এর আগে গত ৩১ আগস্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা বরিশাল নগরীর দড়গাবাড়ি রোড এলাকা থেকে জেএমবির সক্রিয় সদস্য আব্দুল্লাহ আল মিরাজ ওরফে খালেদ সাইফুল্লাহ ওরফে সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকেও র‌্যাব সদস্যরা একটি পিস্তল, দু’টি ম্যাগাজিন, চার রাউন্ড গুলি, ১৬টি জিহাদি বই, একটি সিডি, দুটি পাসপোর্টসহ বিভিন্ন প্রকার ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি উদ্ধার করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা বেশ ভালো। সামনে নির্বাচন। হয়ত পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে জেএমবির সদস্যরা বিচ্ছিন্নভাবে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে।

চলমান অভিযানের কারণে ধারণা করা হয়েছিল, জেএমবি বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। খুব শিগগিরই আর সংগঠিত হতে পারবে না। কিন্তু এরা আবার সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। বিস্তৃতিটা ভয়াবহ পর্যায়ে যায়নি। তারা বিচ্ছিন্নভাবে হয়তো আবারও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। অচিরেই হয়তো গ্রেফতার হবে তারা।

সাইফ আমীন/এমএএস/এমএস