নবজাতকের দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন, দুটি কমিটি গঠন
কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফাতেমা বেগম নামের এক প্রসূতির গর্ভের নবজাতককে তিন খণ্ড করে ফেলার ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে উচ্চপর্যায়ের একটিসহ দুটি কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে দেবিদ্বারে গঠিত ৩ সদস্যের কমিটির এক সদস্যকে পরিবর্তন করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই নার্স ও এক আয়াকে আগামীকাল মঙ্গলবার তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, শনিবার রাতে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের অবহেলার কারণে দুইজন নার্স ও একজন আয়া মিলে প্রসূতি ফাতেমার সন্তান ডেলিভারি করতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটান। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর সোমবার বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই প্রসূতির স্বামী রিকশাচালক সেলিম মিয়া বলেন, ডা. নীলা সরকারি ডাক্তার। তিনি দেবিদ্বারের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে আমার স্ত্রীকে পরীক্ষা করেন। কিন্তু টাকা দিতে পারব না এমন আশঙ্কায় তিনি আমাদেরকে পাঠিয়ে দেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ডা. নীলার কথা মতো আমি সরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় তিনি একবারও আমার স্ত্রীর খবর নেননি। ডাক্তার ও নার্সের অবহেলায় আমার স্ত্রী আজ মরতে বসেছে, আমি তাদের বিচার চাই।
দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আহাম্মদ কবির বলেন, দুই নার্স ও আয়াকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার তাদেরকে তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত থেকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসক আহসানুল হক মিলু ওই সময় হাসপাতালে কর্তব্যরত থাকায় তাকে কমিটি থেকে বাদ দিয়ে শিশু বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আশরাফুল ইসলামকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ঘটনা তদন্তে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন মহিলা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। চিকিৎসায় অবহেলা বা গাফিলতির বিষয়টি প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মো. কামাল উদ্দিন/এএম/এমএস