সেই মুক্তিযোদ্ধাকে নতুন বাড়ি করে দেবেন ইউএনও
মুক্তিযোদ্ধার সেই বাড়িটি দেখতে গেলেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হক। গত ১৯ আগস্ট ‘নিঃস্ব হওয়ার অপেক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার’ শিরোনামে জাগো নিউজে সংবাদ প্রকাশ হয়।
সংবাদ প্রকাশের পর এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন ইউএনও মাহমুদুল হক। বিস্তারিত জেনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে বাড়িটি রক্ষায় সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
সোমবার সকালে মুক্তিযোদ্ধার সেই বাড়িটি দেখতে যান ইউএনও। পরে বাড়ির মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা নিরঞ্জন দাসকে (৭০) আশ্বস্ত করেন যেভাবে হোক বাড়িটি রক্ষার চেষ্টা করা হবে। বাড়িটি রক্ষা করা না গেলে নতুন বাড়ি করে দেব।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বাড়িটি ওই স্থানে রেখে নদীর বাঁধ ঠিক করা সম্ভব নয়। তাই এ বিষয়ে আরও পদক্ষেপ নিয়ে প্রয়োজনে অন্য স্থানে বাড়িটি স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হবে।
ইউএনও মাহমুদুল হক বলেন, জাগো নিউজে সংবাদটি দেখে আমি বিভিন্ন পর্যায়ে খবর নিই। আজ মুক্তিযোদ্ধা নিরঞ্জন দাসের বাড়িটি দেখতে এলাম। মুক্তিযোদ্ধাকে বলেছি কোনো মুক্তিযোদ্ধা ভিটে ছাড়া হবে না। সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে। বাড়িটি রক্ষা করতে না পারলে অন্য স্থানে বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হবে।
মুক্তিযোদ্ধা নিরঞ্জন দাস জাগো নিউজকে বলেন, কয়েক বছর আগে চৈতন্যগঞ্জ এলাকায় ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ও তার বাড়িতে ভাঙন শুরু হয়। প্রথমে বাড়ির পাশের খালি জমি, এরপর বাড়ির এক সময়ের বসতঘর ভাঙতে শুরু করে। পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজার গত বছর তার বসতঘরের নিচে বালুর বস্তা দিয়ে ভাঙনরোধের ব্যবস্থা নিলেও সাম্প্রতিক বন্যার পানিতে বালুর বস্তা সরে গিয়ে তার বাড়িটি এখন ধলাই নদীর বুকে ঝুলে আছে। আর্থিক দৈন্যতার কারণে অন্যত্র নতুন করে বাড়ি নির্মাণ করে সরে যেতে পারছেন না।
কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান জানান, নিরঞ্জন দাসকে বাড়ি তৈরি করে দেয়ার তহবিল ইউনিয়ন পরিষদের নেই। তবে এ বিষয়টি উপজেলা ও জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, জাগো নিউজের প্রতিবেদনটি চোখে পড়েছে। বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। বাড়িটি রক্ষায় ইতোমধ্যে ৫ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে। নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ রক্ষা ও বন্যা প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধানে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এ প্রস্তাবনা অনুমোদন হলে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হবে। তখন এ সমস্যা থাকবে না। মুক্তিযোদ্ধার বাড়িটি রক্ষা করতে আমরা আন্তরিক। তবে বাড়িটি রেখে নদীর বাঁধ রক্ষা করা খুব কঠিন হবে। আমরা এ নিয়ে ভাবনায় আছি।
রিপন দে/এএম/এমএস