পরকীয়ার কারণেই বাবু সোনাকে হত্যা করে দীপা-কামরুল
রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও আওয়ামী লীগ নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা (৫৮) হত্যা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়েছে। বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে গত ১৩ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রংপুরের কোতোয়ালি থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আল-আমিন।
আজ (সোমবার) দুপুরে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার বলেন, মূলত পরকীয়া, পারিবারিক অশান্তি ও বিদ্বেষ থেকেই বাবু সোনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তার স্ত্রী তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা স্নিগ্ধা সরকার দীপা এবং প্রেমিক একই স্কুলের শিক্ষক কামরুল ইসলাম। আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দুজই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেন। হত্যাকাণ্ডে দুই কিশোর সবুজ ও রোকনের সম্পৃক্ততা না থাকায় এবং মিলন মোহন্ত মারা যাওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাবু সোনাকে খাওয়ানো ঘুমের ওষুধের দোকান শনাক্ত, তার মরদেহ বহনের কাজে ব্যবহৃত ভ্যান ও আলমিরাসহ অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ মার্চ রাত আনুমানিক ১০টার দিকে বাবু সোনাকে ভাত ও দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান স্ত্রী দীপা। ঘটনার দুই ঘণ্টা আগে থেকেই বাবু সোনার শোয়ার ঘরের পাশে অবস্থান নেন কামরুল ইসলাম। ওষুধ খাওয়ানোর পর বাবু সোনা অচেতন হয়ে পড়লে কামরুল ঘরে ঢুকে নিপাকে নিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করেন।
বাবু সোনা নিখোঁজের পর ৩১ মার্চ (শনিবার) কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি ও পরদিন রোববার থানায় মামলা করেন তার ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক সুবল। এরই ধারাবাহিকতায় তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ৬ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় বাবু সোনার স্ত্রী দীপাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব আটক করে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেন এবং মরদেহের অবস্থান সম্পর্কে জানান।
ওইদিন রাত ২টার দিকে বাবু সোনার নিজ বাড়ি তাজহাট বাবুপাড়া থেকে আধা কিলোমিটার দূরে তাজহাট মোল্লাপাড়া থেকে শিক্ষক কামরুল ইসলামের ঢাকায় বসবাসরত বড় ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির ঘরের মাটি খুঁড়ে বাবু সোনার মরদেহ উদ্ধার করে র্যাব। এ সময় গর্ত খোঁড়ার কাজে সহায়তা করার কারণে ওই এলাকার দুই কিশোর সবুজ ও রোকনকে আটক করা হয়। এর আগে পুলিশের হাতে আটক হন শিক্ষক কামরুল ইসলাম ও বাবু সোনার ব্যক্তিগত সহকারী মিলন মোহন্ত। পরে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যান মিলন মোহন্ত এবং দীপা ও কামরুল কারাগারে বন্দি।
জিতু কবীর/আরএআর/পিআর