এতটুকু শিশুর ওপর এত নিষ্ঠুরতা!
দুই মেয়ে সারিকা (১০) এবং সাবিয়াকে (০৬) নিয়ে সংসার ভাষার। বড় মেয়ে সারিকা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী আর ছোট মেয়ে সাবিয়া প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। ভাষা মাঠে দিনমজুরের কাজ করেন। অভাবের সংসার তাই জীবিকার তাগিদে স্ত্রী কাজলী খাতুন থাকেন ওমানে।
শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় অনান্য শিশুদের সঙ্গে খেলতে যায় সাবিয়া। সন্ধ্যা নেমে আসে চারিদিকে। অন্য শিশুরা খেলা শেষে বাড়ি ফিরলেও ফেরেনি সাবিয়া। পরদিন শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালেই ধানখেতে মেলে তার ছোট্ট মরদেহটি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কুষ্টিয়ার নব্য পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাতসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পুলিশ সুপার বলেন, শিশু সাবিয়াকে খুবই নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিক আলামতে পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুব শিগগিরই খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যার পরে মিটন শ্মশানের পাশে আম বাগানে চলে মাদকের রমরমা ব্যবসা। মাদক সেবী আর মাদক বিক্রেতাদের আনাগোনা থাকে ওই এলাকায়। এ জন্য সাধারণ মানুষ সেখানে খুব একটা যায় না।
এলাকাবাসী আরো জানায়, এতটুকু শিশুর ওপর এত নিষ্ঠুরতা তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর কোনোদিন না ঘটে এ জন্য হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
সাবিয়ার বাবা ভাষা বলেন, আমার মেয়েকে যারা এমন নির্দয়ভাবে হত্যা করেছে আমি তাদের কঠোর শাস্তি চাই। আমার বাচ্চা মেয়ে। সে কিছুই বোঝে না। তাকে হত্যা করেছে যারা তাদের দ্রুত বিচার চাই।
তিনি আরো বলেন, সারিকা ও সাবিয়া’র মা বিদেশ থাকে। আমি এই দুটি মেয়েকে সব সময় চোখে চোখে রাখি। বিকেলে যখন বাড়ি থেকে বাজারে যায় তখনও সাবিয়া আমার সঙ্গে কথা বলেছিল। সে খেলা করছিল অন্য শিশুদের সঙ্গে। তারপরে আর কথা হয়নি।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আমরা স্থানীয় রবিউল নামের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। আশা করছি খুব শিগগিরই দোষীদের খুঁজে বের করব।
আল-মামুন সাগর/এফএ/জেআইএম