বৌদি মানসিক রোগী, আমার বোন সুস্থ ছিল
কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর শান্তি মেচ ভবনের মালিকের ছেলের স্ত্রী ঋতুপর্ণা চৌধুরীর (২৪) হঠাৎ মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঋতুপর্ণার শ্বশুরপক্ষ তাকে মানসিক রোগী আর বাবার বাড়ির লোকজন সুস্থ বলে দাবি করায় এ রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। ফলে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন তারা।
ঋতুপর্ণা চৌধুরী শহরের লালদিঘীর শান্তি মেচ ভবনের মালিকের ছেলে রানা চৌধুরীর স্ত্রী ও এক সন্তানের জননী। তার বাবার বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া এলাকায়।
শুক্রবার রাত ৮টার দিকে রানার পরিবারের লোকজন ঋতুপর্ণাকে সদর হাসপাতালে নিলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থা থেকে উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয় বলে দাবি করছেন স্বামী রানার পরিবার। শনিবার বিকেলে ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যা পর্যন্ত সদর হাসপাতাল মর্গেই ছিল ঋতুপর্ণার মরদেহ।
নিহতের স্বামী রানা চৌধুরীর ছোট ভাই ডা. রিপন চৌধুরী বলেন, বৌদি মানসিক রোগী ছিলেন। বছর খানেক ধরে বৌদি ঋতুপর্ণা মানসিক ডিপ্রেশন ভুগছিলেন।
এ জন্য তাকে চট্টগ্রামে এক সাইকোলজিস্টকে দেখিয়ে কাউন্সিলিংয়ে রাখা হয়। এটা তার বাবার বাড়ির লোকজনও জানেন। এরই মধ্যে আরও বেশ কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা চালান ঋতুপর্ণা। পরিবারের লোকজনের কারণে আত্মহত্যা করতে পারেননি বৌদি। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন বৌদি। মা বিষয়টি দেখার পর ভাইকে খবর দিলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এদিকে ঋতুপর্ণার ভাই শুভ বলেন, আমার বোন কখনো মানসিক রোগী ছিল না। তারা যে কাউন্সিলিংয়ের কথা বলছেন তা আমাদের জানানো হয়নি। বেশ কিছুদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে মায়ের সঙ্গে কথা বলেছে ঋতুপর্ণা। এর ঘণ্টাখানেক পর জানানো হয় ঋতুপর্ণা আত্মহত্যা করেছে।
ফাঁসি দিয়ে থাকলে বাড়ির একশ গজ দূরত্বে থানায় খবর দেয়া হয়নি কেন এমন প্রশ্ন রেখে শুভ আরও বলেন, এটি সন্দেহজনক। তাই ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। এরপর মামলা করব।
কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, শুক্রবার রাতে খবর পেয়ে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ দিয়ে দিতে নানা জায়গা থেকে তদবির আসে। ফলে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ায় শনিবার বিকেলে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত এটি হত্যা না আত্মহত্যা বলা যাচ্ছে না।
ওসি আরও বলেন, গৃহবধূ ফাঁসি দিয়ে থাকলে পুলিশ না ডেকে নিজেদের মতো করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া আইন সম্মত হয়নি। শনিবার রাতে মরদেহটি মেয়ের পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সায়ীদ আলমগীর/এএম/এমএস