জীবনের মায়া ছেড়ে নদীর পাড়ে মানুষের ভিড়
কয়েক বছর ধরে পদ্মার ভাঙনে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা মানচিত্র থেকে হারাতে বসেছে। চলতি বছরের ৭ জুলাই থেকে নড়িয়া পৌরসভা এলাকার থেকে ভাঙন শুরু করে কেদারপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। কিন্তু এ ভাঙনের শেষ কোথায় তা বলা যাচ্ছে না।
গত ১৯ আগস্ট শনিবার রাতে মুলফৎগঞ্জ বাজার সংলগ্ন হযরত খাজা মঈন উদ্দিন চিশতী (গাজী কালুর মেহমান খানা) নামে চারতলা বিলাসবহুল বাড়িটি পদ্মার গর্ভে চলে যায়। একই সময় খান বাড়ি জামে মসজিদ ও মোহাম্মদ দিলু খার দোতলা পাকা বাড়িটিও গেছে পদ্মার পেটে। সেই থেকেই প্রবল বেগে ভাঙতে থাকে নড়িয়া এলাকা বিভিন্ন বিলাশবহুল বাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা। ঢাকাসহ শরীয়তপুর জেলা ও এর পার্শ্ববর্তী জেলার মানুষ দূর দুরান্তে থেকে ভাঙন দেখতে নড়িয়াতে ভিড় জমায়।
শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, দূর-দূরান্ত থেকে অটোবাইক, অটোরিকসা, নসিমন, মোটরসাইকেল করে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধসহ নানা বয়সের নারী-পুরুষ নদী ভাঙন ও ভাঙন পাড়ের মানুষকে দেখতে আসছে। ভাঙন কবলিত এলাকা, মূলৎগঞ্জ বাজার, কেদারপুর, বাঁশতলায় বিশেষ করে শুক্রবার মানুষের ঢল নামে।
নদী ভাঙন দেখতে আসা সাগর মাঝি বলেন, আমি চাকরি করি। ফেসবুকে ও টিভিতে দেখিছি নড়িয়ার নদী ভাঙন। শুক্রবার অফিস বন্ধ তাই পরিবার নিয়ে এখানে সরাসরি দেখতে এসেছি।
নড়িয়া সাধুর বাজার এলাকার আলম হোসেন জানান, গত ৭ আগস্ট মঙ্গলবার থেকে নদী ভাঙনে মহামারি আকার ধারণ করেছে। সে দিন বিকেলে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নদী ভাঙন দেখতে নড়িয়া সাধুর বাজার লঞ্চঘাটে জড়ো হয়। হঠাৎ করে চার শতক জমি নিয়ে নদী গর্ভে দেবে যায়। সেই সঙ্গে কয়েকটি দোকানসহ ৩৫ থেকে ৪০ জন লোক নদী গর্ভে চলে যায়। এতে ৯ জন নিখোঁজ হয়। আহত হয় অনেকেই। পরবর্তীতে একজনে মরদেহ পেলেও এখনও ৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সেই দিনের কথা সবাই জানে। এরপরও জীবনের মায়া না করে তবুও মানুষ ভাঙন দেখতে নদীর পাড় ঘেঁষে এসে দাঁড়ায়।
নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, ভাঙন কবলিতদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যারা নদী ভাঙন দেখতে আসেন তাদেরও নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ।
ছগির হোসেন/আরএ/এমএস