ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

যেখানে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের কাজ বড়ই কঠিন

প্রকাশিত: ০৯:১৫ এএম, ১১ আগস্ট ২০১৫

নীলফামারী জেলাজুড়ে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের নামে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মোটরসাইকেল মালিকদের। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) নীলফামারীর অফিসে মোটরসাইকেল মালিকদের কাছে নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত তিন হাজার টাকা করে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।

ঘুষের টাকা না দিলের ২/৩ সপ্তাহেও পাওয়া যাচ্ছে না বিআরটিএর কর্মকর্তার স্বাক্ষর ও সিল। নীলফামারীর সৈয়দপুরে একমাত্র ব্র্যাক ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার সময় অতিরিক্ত ঘুষের টাকা ছাড়া জমা দিতে পারছেন না ভুক্তভোগী মোটরসাইকেল মালিকরা। ঘুষের একহাজার টাকা দিলে যেমন সহজে মিলছে টাকা জমা দেয়ার ব্যবস্থা। অন্যথায় দীর্ঘ ৬৮ কিলোমিটার দূর থেকে ডিমলা ও ডোমার মোটরসাইকেল মালিকদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও মিলছে না টাকা জমাদানের অনুমতি।

ভুক্তভোগী মোটর সাইকেলের মালিকগন রেজিস্ট্রেশনের টাকা জেলার একাধিক ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার দাবি করেন। নীলফামারী পুলিশ সুপারের কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, সোমবার পর্যন্ত নীলফামারীর ডিমলা ৯৪টি, ডোমারে ৫৫টি, জলঢাকা ১০৬টি, নীলফামারী সদর ১৮৩টি, সৈয়দপুর ২১১টি ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার ৪৮টি রেজিস্ট্রেশন বিহীন মোটরসাইকেল আটক করা হয়েছে।

নীলফামারীতে এ পর্যন্ত আটককৃত ৫৯৭টি মোটর সাইকেলের মধ্যে ৩ শতাধিক মোটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে মর্মে পুলিশ অফিস সুত্রে নিশ্চিত করেছে। নীলফামারীরতে বিআরটিএ কর্মকর্তা না থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে চলছে রেজিস্ট্রেশনের কাজ। এতে করে মোটর সাইকেলের মালিকদের নিকট হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে ঘুষের টাকা। সপ্তাহের বুধবার বিআরটিএ কর্মকর্তা, মোটরযান পরিদর্শক আসলে যে সকল মোটরসাইকেলের মালিক ঘুষের টাকা দেন না তাদেরকে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না মর্মে অভিযোগ পাওয়া যায়।

নীলফামারীর ডিমলার খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের দোহলপাড়া গ্রামের মোটর সাইকেল মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, নীলফামারীর বিআরটিএ অফিসে টাকা না দিলে বিভিন্ন কাগজ কম আছে বলা হয়। তিনি আরও বলেন ২ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে কাগজ দ্রুত করে নেয়া যায়।

বালাপাড়া ইউনিয়নের রুপাহারা গ্রামের রেজাউল করিম বলেন, সৈয়দপুরে ব্র্যাক ব্যাংকে ঘুষের টাকা না দিলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও টাকা জমা দেয়া যাচ্ছে না। ব্যাংকের এক শ্রেণির দালালকে ১হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করার রেজিস্ট্রেশনের টাকা ব্যাংকে জমা দিতে পেরেছেন।

নীলফামারীর পুলিশ প্রশাসন রেজিস্ট্রেশন বিহিন মোটরসাইকেল অভিযানের কারণে চরম বিপাকে মোটরসাইকেল মালিকরা।

ডিমলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রহুল আমিন খান জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রেজিস্ট্রেশন বিহীন মোটরসাইকেল তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। রেজিস্ট্রেশন না করে কোনো মোটরসাইকেল চালাতে পারবনে না মোটরসাইকেলের মালিকগণ।

নীলফামারীর বিআরটিও মোটরযান পরিদর্শক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নুরল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, আমি দিনাজপুরে কর্মরত আছি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নীলফামারীতে সপ্তাহের বুধবার থাকি। তিনি বলেন, কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে রেজিস্ট্রেশনের টাকা প্রদানের জন্য ফরম পূরণ করা হয়।

নীলফামারীর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এটিএম আব্দুল আউয়াল জাগো নিউজকে বলেন, আমি বিআরটিএ রংপুর অফিসে থাকি। প্রতি বুধবার নীলফামারীতে গিয়ে কাগজপত্রে স্বাক্ষর করি। এছাড়া নীলফামারী অফিসে সপ্তাহের পাঁচদিন মোটরসাইকেলের কাগজপত্র জমা নেয়া হয়। কাগজপত্র যাচাই বাছাই করার নামে ঘুষ নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, যাদের কাগজের ক্রটি আছে সে সকল মালিকগণ ভিত্তিহীন অভিযোগ করেন।
 
নীলফামারীর সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফিরোজ কবির জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক নীলফামারীর জেলায় রেজিস্ট্রেশন বিহীন কোনো মোটরসাইকেল রাস্তায় নামতে দেয়া হবে না।
 

জাহেদুল ইসলাম/এমজেড/এমআরআই