ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নদীর পানির চাপে খুলনার বাঁধগুলো হুমকিতে

প্রকাশিত: ০৯:০৮ এএম, ১১ আগস্ট ২০১৫

খুলনা অঞ্চলের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে অস্বাভাবিক হারে। এখন বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। অতিরিক্ত পানির চাপ সামাল দিতে পারছে না উপকূল রক্ষায় দুর্বল এ বেড়িবাঁধগুলো। পূর্ণিমার ভরা জোয়ার ও উজানের চাপের কারণেই এ পানি বৃদ্ধি বলে দাবি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

এদিকে শুষ্ক মৌসুমে এসব বেড়িবাঁধ সঠিকভাবে মেরামত না করায় তা ভেঙে যাওয়ায় বিপদে পড়েছে উপকূলীয় এলাকাবাসী।

পাউবো সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি অতিবৃষ্টি, ভরা পূর্ণিমায় নদীতে জোয়ার বৃদ্ধি এবং উত্তরাঞ্চলে বন্যার পানি নিম্নাঞ্চলে চাপ সৃষ্টির কারণে খুলনার নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সাগরে নিম্নচাপের কারণেই এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই উপকূল রক্ষায় ষাটের দশকে তৈরি এ দুর্বল বাঁধগুলো পানির চাপ সহ্য করতে পারছে না। ফলে বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদীতে পানির উচ্চতা পরিমাপক বিভাগ থেকে জানা গেছে, বর্তমানে খুলনা অঞ্চলের নদ নদীতে এখন স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত জুন মাসে খুলনার রূপসা নদীতে পানির সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ২ দশমিক ৯০ মিটার। অথচ মে মাসে ছিল ২ দশমিক ২৫ মিটার।

সূত্র বলছে, বেড়িবাঁধগুলো তৈরি করা হয় পানির প্রবাহের স্বাভাবিক মাত্রা নির্ধারণ করে। ২ দশমিক ৫৯ মিটার পর্যন্ত পানি প্রবাহের চাপ সহ্য করার সক্ষমতা রয়েছে এসব বাঁধের। তবে সম্প্রতি এর থেকে অনেক বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে পানি। গত কয়েকদিনের রেকর্ডে এমনটাই বোঝা গেছে বলে দাবি করেছে পাউবো কর্তৃপক্ষ।

জুলাই মাসের শেষ সময়ে যেসব এলাকার নদীতে ভাঙন দেখা গেছে, ওই সময় নদীতে পানির প্রবাহ ছিল অনেক বেশি। গত ৩১ জুলাই চালনার পশুর নদীতে পানির চাপ ছিল ২ দশমিক ৯৭ মিটার, ১ আগস্ট ছিল ৩ দশমিক ৬৮ মিটার এবং ২ আগস্ট ছিল ৩ দশমিক ৬২ মিটার।

২০১৪ সালের ১ আগস্টে ওই নদীতে পানির প্রবাহ ছিল ২ দশমিক ৩৯ মিটার। ওই বছর ২ আগস্ট ছিল ২ দশমিক ৩৫ মিটার। ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর যে এলাকায় ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে ৩১ আগস্ট ওই এলাকায় পানির স্বাভাবিক উচ্চতা ছিল ২ দশমিক ৯৭ মিটার। আবার খুলনার ভৈরব নদীতে ছিল ৩ দশমিক ২২ মিটার। শহর রক্ষা বাঁধ পানির এই উচ্চতা ঠেকাতে পারলেও নগরীর দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির সামনে বেড়িবাঁধ ভেঙে শহরে পানি ঢোকে।

ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আমিনুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, নদী থেকে পানি উপচে প্রবেশ করছে উপকূলের অভ্যন্তরে। যে উঁচু করে বাঁধ দেয়া প্রয়োজন সে অনুযায়ী বাঁধ দেয়া নেই। তাই সামান্য বৃষ্টির পানির চাপ সহ্য করতে পারছে না এসব বাঁধ।

পানি বৃদ্ধিতে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে পাউবোর উপ সহকারি প্রকৌশলী দাকোপ অঞ্চলের দয়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফিরোজ জাগো নিউজকে বলেন, নদীতে পানির চাপ বৃদ্ধি পেলেই ভেঙে যাচ্ছে বেড়িবাঁধগুলো। পানির উচ্চচাপ সামলাতে পারছে না। পানি সমালাতে যেভাবে বাঁধগুলো দেয়া প্রয়োজন অনেক সময় পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের অভাবে সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে ভেঙে যাচ্ছে বাঁধ।

পাউবো খুলনা-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুণ্ডু জাগো নিউজকে বলেন, বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থান উপচে পানি প্রবেশ করছে উপকূলে। যখন নদীর পানি উপচে প্রবেশ করে তখন সে স্থান ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে  বেশি। দুর্বল স্থানগুলো বাছাই করা হয়েছে। সেগুলো মেরামতের জন্য ইতোমধ্যে টেন্ডার হয়ে গেছে।

আলমগীর হান্নান/এমজেড/পিআর