কালুরঘাট সেতুতে ভেসে আসা জাহাজের আঘাত, সরে গেছে স্প্যান
ডকইয়ার্ড থেকে ভেসে আসা নির্মাণাধীন একটি জাহাজের আঘাতে কর্ণফুলী নদীর ওপর ব্রিটিশ আমলে নির্মিত কালুরঘাট রেলওয়ে সেতুর স্প্যান সরে গেছে। এ কারণে যানচলাচলে সর্তক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বিভাগের রেলওয়ে সেতু পরিদর্শক মো. আকবর জাগো নিউজকে জানান, কালুঘাট এলাকার একটি ডকইয়ার্ড থেকে নির্মাণাধীন একটি জাহাজ ভেসে যায়। জাহাজটি ভেসে এসে সেতুতে আঘাত করলে সেতুর পূর্বপ্রান্তের ৫নং পিলারের স্প্যান সরে যায়। এতে সেতুটির বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। যা পুরোপুরি সারতে প্রায় ২০ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে।
মো. আকবর বলেন, ‘গত দুইদিনের চেষ্টায় স্পেনটি মোটামুটি ঠিক করা গেছে। তাই আপাতত বিপদ কেটে গেছে। তবে পুরোপুরি কাজ শেষ করতে আরও দুইদিন লাগবে। তবে যান চলাচলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়া জন্য সেতু দিয়ে চলাচলের সময় রেলের গতি ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এক কোটি টাকা ব্যয়ে কালুরঘাট সেতু মেরামত করা হয়। এর আগে ২০০৪ সালের আগস্ট মাসে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে বড় ধরনের সংস্কার কাজ করা হয়। এ সময় ১১ মাস সেতুর ওপর যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ১৯৮৬ ও ১৯৯৭ সালেও দুই দফায় সংস্কার হয় সেতুটি। এছাড়া প্রতিনিয়ত ছোটখাটো মেরামত কাজ করা লাগে বয়সের ভারে ন্যুব্জ এই সেতুর।
১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্মা ফ্রন্টের সেনা চলাচলের জন্য কর্ণফুলী নদীতে একটি আপৎকালীন সেতু তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ১৯৩০ সালে ‘ব্রুনিক অ্যান্ড কোম্পানির ব্রিজ কোম্পানি ব্রিজ বিল্ডার্স-হাওড়া নামে একটি প্রতিষ্ঠান এ সেতু তৈরি করে। জরুরি ভিত্তিতে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে নির্মিত ৭০০ গজ লম্বা সেতুটিতে ছয়টি ব্রিক পিলার, ১২টি স্টিল পিলার, দুটি অ্যাবটমেন্ট ও ১৯টি স্প্যান রয়েছে।
সেতুটি উদ্বোধন করা হয় ১৯৩০ সালের ৪ জুন। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে পুনরায় বার্মা ফ্রন্টের যুদ্ধ-মোটরযান চলাচলের জন্য ডেক বসানো হয়। দেশ বিভাগের পর ডেক তুলে ফেলা হয়। এই একমুখী যুদ্ধসেতুটিতে সবধরনের যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় ১৯৫৮ সালে।
আবু আজাদ/বিএ