শিলাইদহে কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধে ভাঙন
নির্মাণের মাত্র দুই মাসের মাথায় ধসে গেল কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধ। প্রমত্তা পদ্মার ভাঙন থেকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি রক্ষায় প্রায় ২শ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধটি নির্মাণ করে সরকার। সোমবার দুপুর থেকে কয়া ইউনিয়নের কালোয়া অংশে ভয়াবহ ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে থাকে রক্ষা বাঁধ।
প্রকল্পটি নিয়ে শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছিল জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে অসম্পূর্ণ প্রকল্পকে সম্পূর্ণ দেখিয়ে কাগজে কলমে প্রকল্পটি হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড তত্ত্বাবধায়নে ‘কুষ্টিয়া জেলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি সংলগ্ন এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় পদ্মা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্পের ৩ হাজার ৭২০ মিটার বাঁধ নির্মাণ করে সরকার।
প্রকল্পের মেয়াদ ৩১ মে পর্যন্ত থাকলেও অসম্পূর্ণ প্রকল্পকে সম্পূর্ণ হয়েছে দেখিয়ে ৩০ জুন কাগজে কলমে হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধ প্রকল্পটি সমাপ্ত ঘোষণা করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়া। যদিও এ প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ে তৈরি ১৩ লাখ ব্লকের মধ্যে ২ লাখ ৫০ হাজার ব্লক পড়ে আছে। কিন্তু পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে দুই মাস আগে নির্মিত বাঁধে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় কয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম স্বপন বলেন, রোববার দুপুরে কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধের কয়া ইউনিয়নের কালুয়া অংশে হঠাৎ ভাঙন দেখা দেয়। মুহূর্তেই প্রায় ৫০ মিটার বাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে চলে যায়। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যে পুরো বাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে চলে যাবে। প্রভাবশালী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণেই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে কুঠিবাড়ী রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, কালোয়া এলাকার কিছু অংশ ভেঙে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার সকল কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত অংশে তাৎক্ষণিক ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
আল-মামুন সাগর/আরএআর/পিআর