নার্সই ডাক্তার!
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় কৈতক হাসপাতালে একজন নার্স হয়েও তিনি প্রতিনিয়ত ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন রোগীদের। নিজ বাসায় একটি চেম্বারও খুলে বসেছেন তিনি। এখানেই শেষ নয় হাসপাতালের একমাত্র গাইনি চিকিৎসক সেজে প্রতিনিয়ত রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন নার্স আয়শা বেগম।
ভুয়া এ চিকিৎসক তার ভুল চিকিৎসা ও প্রতারণার ফাঁদে ফেলে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ফলে ওই হাসপাতালে গিয়ে সুস্থ হওয়া তো দূরের কথা রোগীদের আরও বেশি বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, ২০১০ সালে হাসপাতালে একজন সেবিকা হিসেবে আয়শা বেগম যোগদান করেন। কিছুদিন পর ডাক্তার সেজে তার বাসায় চেম্বার খুলে নিয়মিতভাবে রোগী দেখা শুরু করেন। ডাক্তাররা তার অবৈধ প্রতারণা ব্যবসায় প্রতিবাদ করলে নেমে আসে নানা ধরনের হুমকি-ধামকির ঘটনা। ফলে মানসম্মানের ভয়ে প্রতিবাদ থেকে বিরত থাকেন তারা।
সরেজমিন দেখা গেছে, আয়শা বেগম নিজেই তার চেম্বারে আসা রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। প্রতিটি রোগীর কাছ থেকে ফি নিচ্ছেন ৩০০ টাকা। চিকিৎসা শেষে নিজের সাদা কাগজে লিখে দিচ্ছেন প্রেসক্রিপশনও। চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত সব যন্ত্রপাতি চেম্বারে রাখায় রোগীরা সহজেই প্রতারিত হচ্ছেন।
হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে গাইনি ডাক্তারের পদ শূন্য থাকার সুযোগে তিনি এ প্রতারণা করে আসছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ নার্স আয়শা বেগম বেশিরভাগ সময়ই প্রাইভেট চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ৮ বছর ধরে আয়শা বেগম একাধারে কর্মরত থাকায় হাসপাতালটিতে তার একক শাসন চলে।
এ বিষয়ে কৈতক হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক মোহাম্মদ মোজাহারুল ইসলাম জানান, নার্সরা রোগীর সেবা দেবে কিন্তু ব্যবস্থাপত্র দিতে পারবেন না।
তবে নার্স আয়শা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক জাহানারা বেগম জানান, চিকিৎসক ছাড়া কেউ যদি ব্যবস্থাপত্র লেখে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই হাসপাতালের নার্সদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তের পর দোষী প্রমাণিত হলে তাকে শাস্তি দেয়া হবে।
এফএ/এমএস