সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল অভিমানি ছেলেটার প্রাণ
ফেসবুকে শাকিলের শেষ স্টেটাস ছিল ‘আমি কারোর মতো না, আর হতেও চাই না, কারণ আমি আমার মতো।’ এমন আরও অনেক স্ট্যাটাসে ভেসে ওঠে ছোট্ট অভিমানি মনটার প্রতিচ্ছবি। কতইবা বয়স হয়েছিলে ছেলেটার? সদ্য কলেজ পাস করা শাকিলের মনে কেন এত চাপা অভিমান? তা আর কখনো জানা যাবে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে চাঁদের গাড়ি (জিপ) ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত হয় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া কলেজের স্নাতক শিক্ষার্থী মো. শাকিল (১৯)।
শাকিল উপজেলার হোছনাবাদ ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে। চার ভাই এক বোনের মধ্যে সবার ছোট। তার বাবা ও অপর তিন ভাই মধ্যপ্রাচ্যে থাকেন।
মাত্র তিনদিন আগে গত ২৭ আগস্ট শাকিলের ফেসবুকে দেয়া শেষ সেই স্ট্যাটাস দেখে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন স্বজনরা। তার মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ফেসবুকে তার লেখা স্ট্যাটাসের নিচে বন্ধুরাও জানাচ্ছে শোক।
নিহত শাকিলের ফেসবুক ওয়ালের রয়েছে সদ্য কৈশর পেরোনো মনের অভিমানের নানা কথা। গত ১৩ জুলাই দেয়া একটি স্ট্যাটাসে সে লিখেছে, ‘বড় ইচ্ছে করে যদি মরে গিয়ে দেখতে পারতাম, কে আমার জন্য কান্না করে’।
শাকিলের সেই স্ট্যাটাসের নিচে বন্ধু কাউসার আলম লিখেছে, ‘ভালো থাকিস বন্ধু পরপারে! ৪৫ মিনিট আগেও তোর সঙ্গে দেখা হয়, নানা কথা বলেছিলি, তোর জন্য শুধু আমি না, সব বন্ধু অঝোরে কান্না করছে, তোর মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছি না।’
গত ২০ আগস্ট শাকিল লিখেছে, ‘একা থাকা অনেক ভালো। কারণ একাকিত্ব কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করে না।’
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মুহাম্মদ আহসানুল কাদের ভূঞা জাগো নিউজকে বলেন, ‘গতকাল রাত ৯টার দিকে চন্দ্রঘোনা কদমতলি ইউনিয়নের হাবিবের গোট্টা এলাকায় চাঁদের গাড়ি ও যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। প্রচণ্ড ধাক্কায় অটোরিকশাটি সড়কের পাশের খাদে গিয়ে পড়ে। ঘটনার পরই চাঁদের গাড়ির চালক ও চালকের সহকারী গাড়ি রেখে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় অটোরিকশার চালকসহ পাঁচজনকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করেন।’
জেডএ/পিআর