জর্ডানে যৌন নির্যাতনের শিকার সেই তরুণীর মামলা
জর্ডানে যৌন নির্যাতনে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে দেশে ফিরে সন্তান জন্ম দেয়া মানিকগঞ্জের সেই তরুণী অবশেষে থানায় মামলা করেছেন। মানব পাচার, নারী ও শিশু নির্যাতন, জোর করে দাসত্ব করানো, আটকে রেখে যৌন নির্যাতনে বাধ্য করা ও ধর্ষণের অভিযোগে মঙ্গলবার সিংগাইর থানায় মামলাটি করেছেন তিনি।
মামলায় জর্ডান প্রবাসী সিংগাইর উপজেলার চর চামটা গ্রামের সোনিয়া আক্তার, তার বাবা লিহাজ উদ্দিন বেপারী, মা জরিনা বেগম, ধল্লা গ্রামের আয়শা আক্তার ও বিদেশি নাগরিক গরজিদকে আসামি করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতেই সেনিয়ার মা-বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এছাড়া মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীমের আজ বৃহস্পতিবার ওই তরুণী ও তার নবজাতককে দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেন জানান, জর্ডানে নির্যাতনের শিকার মেয়েটির সন্তান প্রসবের ঘটনা জানার পর পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাদের সব ধরনের আইনগত সহায়তা দেয়া হচ্ছে। পুলিশ সুপার নিজেই বিষয়টি মনিটরিং করছেন।
গ্রেফতার দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের ব্যাপারেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার দরিদ্র পরিবারের ওই তরুণী অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর জর্ডানে যান। স্থানীয় দালালরা তাকে বাসা বাড়িতে কাজ দেয়ার কথা বলে পাঠালোও জর্ডানে তাকে বাধ্য করা হয় যৌনকাজে।
একই উপজেলার জর্ডান প্রবাসী সেনিয়া আক্তারও আরো কয়েকজন নারীর সঙ্গে ১০ মাস তাকে আটকে রেখে যৌন কাজে বাধ্য করেন। এক পর্যায়ে ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে দুই মাস জেল খাটার পর গত ১৮ এপ্রিল দেশে ফিরে আসেন।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে এক তরুণী। কিন্তু সন্তান জন্ম দেয়ার পর পড়েছেন নতুন বিপদে। সমাজপতিরা তাদের সমাজচ্যুত করেছেন। সন্তান কার পরিচয়ে বড় হবে তা নিয়ে পরিবারে দেখা দিয়েছে দুঃশ্চিন্তা।
বি. এম খোরশেদ/এফএ/আরআইপি