তৃতীয়বারের মতো পদ্মায় তলিয়ে গেল বিদ্যালয়টি
শেষ পর্যন্ত পদ্মার গ্রাসে হারিয়ে গেল রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়। রোববার দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়টি পুরোপুরি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
রোববার দুপুরে বিদ্যালয়টির পাকা ভবনের অংশবিশেষ সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছিল। সপ্তাহখানেক আগেও পদ্মার ভাঙন ছিল ভবন থেকে ৩০ মিটার দূরে। দিনে দিনে তা চলে আশে ভেতরে।
৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বছর দুয়েক আগে পদ্মার চরাঞ্চল চকরাজাপুরে নির্মাণ করা হয় বিদ্যালয়টি। ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠা পায় চরাঞ্চলের একমাত্র চকরাজাপুর উচ্চবিদ্যালয়। এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো পদ্মায় গেলো চকরাজাপুর বিদ্যালয়। প্রতিবারই ভেঙেচুরে সরিয়ে নেয়া হয় স্থাপনা।
এবার ভাঙন আতঙ্কে আগেভাগেই বন্ধ করে দেয়া হয় পাঠদান। তড়িঘড়ি করে সরিয়ে নেয়া হয় টিনশেড ভবন। তবে এখনও সরিয়ে নেয়া বিদ্যালয়ে শুরু হয়নি পাঠদান। এতে চরাঞ্চলের এই বিদ্যলয়টির ৬১৩ জন শিক্ষার্থীর পড়ালেখা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
চকরাজাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সাত্তার বলেন, ভাঙতে ভাঙতে শেষ পর্যন্ত পদ্মার গ্রাসেই বিলীন হলো বিদ্যালয়টি। তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন বিদ্যালয়টি সরিয়ে নেয়ার। কিন্তু সরানো অবস্থায় সেটি তলিয়ে গেছে।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজিজুল আযম বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেয়ে বিদ্যালয়টি অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়া হচ্ছিল। হাতে কম সময় পাওয়ায় সামান্যই মালামাল সরানো সম্ভব হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, গত ২ আগস্ট তিনি বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে যান। ওই সময় ভাঙন বেশ দূরেই ছিল। ৬ আগস্ট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আবারও পরিদর্শন করেন তিনি। তখন ভাঙন চলে এসেছিল একেবারেই কাছে। পরে বিদ্যালয়টি সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ আসে।
কেবল এ বিদ্যালয়ই নয় চকরাজাপুর বাজারসহ বিলীন হয়েছে লোকালয়। এলাকায় দেড় হাজার বিঘা ফসলি জমি তলিয়ে গেছে নদীগর্ভে। সব হারিয়ে পথে বসেছে হাজারো পরিবার। ভাঙন কবলে পড়েছে ইউনিয়নের ১৫ চরাঞ্চলের ব্যাপক এলাকা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, উপজেলার প্রায় ৪ কিলোমিটার নদীতীর অরক্ষিত। গত ৭ বছরের ভাঙনে এই এলাকার ছয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার এবং বিজিবি ক্যাম্পসহ প্রায় ৫০০ বাড়িঘর চলে গেছে পদ্মায়। বিলীন হয়েছে কয়েক হাজার বিঘা আবাদি-অনাবাদি জমি। সহায়-সম্বল হারিয়ে সর্বস্বান্ত বহু পরিবার।
জেডএ