ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

অর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধ ইমরানের

নিজস্ব প্রতিবেদক | রাজশাহী | প্রকাশিত: ০৬:১৬ পিএম, ১২ আগস্ট ২০১৮

অর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে রাজশাহীর তানোর উপজেলার সাংবাদিক ইমরান হোসাইনের। তার বাম চোখ, হাত ও পা অচল প্রায়। উঠে দাঁড়াতে বা হাঁটাচলাও করতে পারে না। এখন তার সময় কাটে শুয়ে থেকে। শরীরজুড়ে ক্ষতও শুকাচ্ছে না। টানা ব্যয়বহুল চিকিৎসায় সর্বশান্ত তার পরিবার। বাধ্য হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে এখন বাড়িতেই বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাচ্ছেন। আর তাই স্বজনরা তার চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেছেন।

ইমরাত হোসাইন তানোর পৌরশহরের জিওল চাঁনপুর এলাকার বাসিন্দা। যুগান্তর, করতোয়া ও রাজশাহী থেকে প্রকাশিত সোনারদেশ পত্রিকার তানোর প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন তিনি দীর্ঘদিন। গত বছর ২০ সেপ্টম্বর সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে চায়ের দোকানে বসে ছিলেন ইমরান। এ সময়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে ছোট ভাই মওদুদ আহমেদ তার ওপরে হামলা চালায়। হাতুড়ি দিয়ে মাথায় মারাত্মকভাবে আঘাত করে তাকে হত্যাচেষ্টা করে। ওই দিনই মুমূর্ষু ইমরানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়। সেখানে দীর্ঘ অস্ত্রপচার শেষে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেয়া হয়। সেখানে ১১ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর জ্ঞান ফেরে তার। পরে দেড় মাস রামেক হাসপাতালে ভর্তি থাকেন। এ সময় চিকিৎসক তার চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও শেষ পর্যন্ত অর্থাভাবে তাকে বাড়ি নিয়ে যায় তার পরিবার। এখন বিনা চিকিৎসায় বাড়িতেই পড়ে রয়েছেন এই সাংবাদিক।

ইমরান হোসেন তানোর পৌর যুবলীগের সাবেক দফতর সম্পাদক ছিলেন। সর্বশেষ তিনি তানোর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন ইমরান। বর্তমানে ৪ সদস্যের পরিবার চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। বন্ধ হবার উপক্রম ২ সন্তানের লেখাপড়া।

সাংবাদিক ইমরান হোসাইন জানান, ওই হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মমতাজুল হক তার চিকিৎসা করেছেন। তিনি এক মাস পরপর আবার চিকিৎসার জন্য যেতে বললেও টাকার অভাবে মাস পেরিয়ে গেলেও যেতে পারছেন না। তাছাড়াও এক চোখের সমস্যার জন্য বিদেশেও যেতে পারছেন না। তার চিকিৎসা ও পরিবারের খরচ আসছে অন্যের সাহায্যে।

ইমরানের স্ত্রী তহমিনা বেগম জানান, কিছু জমি ও দুটি গরু বিক্রি করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যয়ভার মেটানো হয়েছে। পরে তৎকালীন ইউএনও মুহা. শওকাত আলীর অনুদান ও কয়েকজন মানুষ ব্যক্তিগতভাবে সহায়তা দেন। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার কারণে সে টাকাও খরচ হয়ে গেছে। সরকারি হাসপাতালে থাকলেও প্রায় সব ওষুধ ও ইনজেকশন কিনতে হয়েছে। যা ছিল ব্যয়বহুল।

তিনি আরও জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন ইমরান। কিন্তু এখন আয় বন্ধ হওয়ার পর সংসারে তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় ইমরানের চিকিৎসা করার মতো আর্থিক সামর্থ্য তাদের নেই। একমাত্র ছেলে নাগিব ষষ্ঠ শ্রেণিতে ও মেয়ে বুশরা প্রাক-প্রাথমিকে শিশু শ্রেণিতে পড়ে। তাদের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম। তাই স্বামীর চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান তহমিনা বেগম।

এদিকে হামলার ঘটনার পর (২৫ সেপ্টম্বর ২০১৭) ইমরানের স্ত্রী তহমিনা বাদী হয়ে ভাসুর মওদুদকে আসামি করে তানোর থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। গত ২৮ মার্চ মওদুদকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন তানোর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম। ঘটনার পর থেকেই আসামি মওদুদ পলাতক রয়েছে।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএ/জেআইএম

আরও পড়ুন