শাপলা বিক্রি করেই চলে ওদের জীবন
সারাদিন কাঠফাটা রোদ কিংবা মুষলধারে বৃষ্টি যাই হোক না কেন বিলে ওদের যেতেই হবে। শাপলা তুলতেই হবে। তানা হলে সংসার চলবে কি করে? বিলের শাপলাই তো তাদের অন্ন জোগাতে সিংগভাগ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি তাল গাছ দিয়ে তৈরি কোন্দা (তাল গাছের নৌকা) ও ছোট ডিঙ্গি নৌকা পরম বন্ধুর মতো তাদের সহযোগিতা করছে। বলছিলাম গাজীপুরের কালীগঞ্জের বেলাই ও মোহানী বিলে পাড়ের মানুষের কথা।
জাতীয় ফুল শাপলা বিক্রি করেই বিল পাড়ের ওই মানুষদের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করতে হয়। কারণ এই শাপলাই তাদের প্রতিদিনের অন্ন জোগাতে ভূমিকা রাখছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল এমনই দৃশ্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পৌর এলাকার দুর্বাটি ও বক্তারপুর ইউনিয়নের মোহানী গ্রামের বিল পাড়ের প্রায় অর্ধশতাধিক দরিদ্র মানুষ এই শাপলা তোলার কাজে নিয়োজিত। বর্ষা মৌসুমের প্রতিদিনই তারা এই শাপলা তোলার কাজটি করে থাকে। আর শাপলা তুলে একদিকে নিজের সংসারের খরচের চাহিদা মেটাচ্ছেন অন্যদিকে সবজি হিসেবে অতি জনপ্রিয় করে তুলছে জাতীয় ফুল শাপলাকে।
দুর্বাটি গ্রামের মতিউর রহমান (৪৬) জাগো নিউজকে জানান, প্রতিদিন ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত এই শাপলা উঠানোর কাজ করে তারা। আর ওই উঠানো শাপলা বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আটি করা হয়। পরের দিন সকালে সেগুলো চলে যায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরগুলোতে। শুধু মতিউর নয় তার মতো এ কাজ করছেন একই গ্রামের মকবুল (২২), শফিক (৩৫), আমিন (৩২), ইব্রাহিম (৪০)।
ওই গ্রামের মহিদুল (৩৫) বলেন, আমাদের উঠানো শাপলা বিক্রি হয় রাজধানীর মোহাম্মদপুর, রায়ের বাজার, কারওয়ান বাজারসহ দেশের বিভাগীয় বড় বড় বাজারগুলোতে।
মোহানী গ্রামের আছিব (৩২) জানান, প্রতিদিন তারা ৪ পিকআপ শাপলা তুলতে পারে। আর প্রতি পিকআপের ভাড়া দিতে হয় ১৮শ থেকে ২ হাজার টাকা।
একই গ্রামের মজিবুর (৪৫) জানান, প্রতিদিন তাদের গড়ে প্রত্যেকের প্রায় ১ হাজার ৫শ থেকে ২ হাজার টাকা করে আয় হয়। ফারুক (৪২) জানান, সময়ের কারণে পাইকারি দরে প্রতি আটি ৫ টাকা ধরে বিক্রি করা হয়। কিন্তু যদি সময় নিয়ে বাজারে খুচরা বিক্রি করা যেত তবে এই আয় আরো বেশি হতো।
আব্দুর রহমান আরমান/এসএস/এমএস