পচা পাটে দূষিত হচ্ছে ভৈরব
দূষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মেহেরপুরের ভৈরব নদ। চলতি মৌসুমে পাট জাগ দেয়ায় পচা পানিতে মাছ মরে ভেসে উঠছে। গত বছরও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেস কয়েকবার মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে নদটির বিভিন্ন স্থানে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে এবং নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভৈরবের ২৯ কিলোমিটারে খনন কাজ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মেহেরপুর সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর ও কালাচাঁদপুর, মুজিবনগরের মোনাখালি, বাগোয়ান ও রতনপুর এবং গাংনীর গাড়াবাড়িয়া গ্রাম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভৈরব নদের দুইটি স্থানে স্থানীয় কৃষকদের পাট জাগ দেয়া রয়েছে। জেলা সদরের কুতুবপুর ও উজলপুর গ্রামে নদের পানিতে ডোবানো হচ্ছে পাট। সেই পাট দুই এক সপ্তাহে পচে পানিতে মিশছে। এতে দূষিত হচ্ছে নদের পানি।
এনিয়ে গত শনিবার সদর উপজেলার উজলপুর গ্রাম সংলগ্ন ভৈরব নদে পাট পচিয়ে পানি দূষিত করার অপরাধে দুই ব্যক্তিকে ১৫ দিন করে কারাদণ্ডও দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম মো. সামিউল হক বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে পাট পচিয়ে নদের পানি দূষণ থেকে বিরত রাখতে প্রতিনিয়ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।
সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের পাটচাষি মিলন রহমান বলেন, ভৈরব নদের পানি পরিষ্কার। ওই পানিতে পাট জাগ দিলে সেই পাটও পরিষ্কার হয়। আর এ ধরনের পাটের দামও ভালো। বেশি দামের আশায় অনেকে তাদের পাট ভৈরব নদে জাগ দিচ্ছে।
মেহেরপুরের মৎস্য কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া জানান, পাট জাগের দূষিত পানিতে মাছ মারা যায়। সম্প্রতি ভৈরবের পানিতে দূষণের মাত্রা বাড়তে লক্ষ্য করেছেন তারা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে তাদের একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে ভৈরবের মাছ রক্ষা করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
ভৈরবপাড়ের বাসিন্দা ডাবলু রহমান বলেন, বর্ষা শুরুর পর থেকে সব রকমের মাছ মরে ভেসে উঠছে। পানিতেও আর গোসল করা যাচ্ছে না। গোছল করলে শরীর চুলকায়।
জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন বলেন, ভৈরব নদ দূষণ রক্ষায় জেলা প্রশাসন সব ধরনের কাজ করবে। সম্প্রতি ভৈরবের পানিতে পাট জাগ ও দূষণের অপরাধে জেল জরিমানা করা হয়েছে।
আসিফ ইকবাল/এফএ/এমএস