একমাত্র সন্তানের সন্ধানে রাস্তায় বিধবা মা
মো. আতিকুর রহমান শাওন ওরফে বাবু। বিধবা মায়ের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। বরগুনা সরকারি কলেজের বিবিএস তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বাবু বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের রায়ভোগ গ্রামের মৃত গোলাম কবির মাতুব্বরের একমাত্র ছেলে।
গত ১২ জুলাই (বৃহস্পতিবার) রাত ২টার দিকে আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত ১০-১২ জনের একটি দল ঘরের দরজা ভেঙে মায়ের সামনে থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় ঘরে থাকা বাবুর মা মোসা. নাজমুন্নাহার লাকি তাদের বাঁধা দিতে গেলে তাকে হত্যার হুমকি দেয় অস্ত্রধারীরা। এরপর থেকে গত ২২ দিন ধরে বাবু নিখোঁজ। আর এই ২২ দিন ধরে কান্না যেন শেষই হচ্ছে না বিধবা মা মোসা.নাজমুন্নাহার লাকি। ধর্ণা দিচ্ছেন এখানে সেখানে। একমাত্র ছেলেকে উদ্ধার করে দিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রত্যেকের দ্বারে দ্বারে। তবু খোঁজ মিলছে না বাবুর। বাবু বেঁচে আছে নাকি তাকে মেরে ফেলা হয়েছে, তাও জানে না কেউ।
এদিকে বাবুর সন্ধানের শনিবার সকাল ১০টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে মানববন্ধন করেছে বাবুর স্বজন ও এলাকাবাসী। এতে নানা শ্রেণি-পেশার দুই দশতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন চলাকালীন সমাবেশে নিখোঁজ বাবুর স্বরজনদের পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন- নিখোঁজ বাবুর মা মোসা. নাজমুন্নাহার লাকির। এ সময় তার কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন মানববন্ধন ও এর আশেপাশে থাকা লোকজনও। বক্তব্যে তিনি প্রশাসন থেকে শুরু করে সকলের কাছে তার ছেলে বাবুকে উদ্ধার করে দেয়ার অনুরোধ জানান।
বাবু অপহরণের ঘটনায় গত ২৬ জুলাই বরগুনার চিফ জুডিসিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন বাবুর মা মোসাঃ নাজমুন্নাহার লাকি। পরে আদালতের বিচারক মোঃ জাহিদ হাসান অভিযোগটি আমলে নিয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলা নেয়ার নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে বরগুনা সদরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) এসএম মাসুদুজ্জামান বলেন, বাবু অপহরণের ঘটনায় বরগুনা সদর থানায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। নিখোঁজ বাবুর সন্ধানে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
মো. সাইফুল ইসলাম মিরাজ/আরএ/পিআর