মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে হাত-পা চেপে ধরে অপারেশন
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় রোগীকে অচেতন না করে অপারেশনের অভিযোগ উঠেছে। দুস্থ মানবতার হাসপাতাল অ্যান্ড প্যাথলজির চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোগীর হাত-পা চেপে ধরে মুখে স্কচটেপ দিয়ে অচেতন না করে স্তন টিউমার অপারেশন করে চিকিৎসকরা। ওই রোগীকে বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় রোগীর আত্মীয়-স্বজনসহ স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গৃহবধূর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের পর গৃহবধূ আছিয়ার স্তনে টিউমার দেখা দিলে ১৭ জুলাই উপজেলা হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুনের কাছে চিকিৎসার জন্য যান। তিনি ওই রোগীকে অপারেশনের জন্য আগৈলঝাড়া দুস্থ মানবতার হাসপাতালের ডা. হিরন্ময় হালদারের কাছে পাঠান। ডা. হিরন্ময় হালদারের অনুপস্থিতিতে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মো. আশরাফুল ইসলাম (শাওন) রোগী আছিয়া খানমকে ওটিতে অচেতন না করে নার্স ও হাসপাতালের পরিছন্ন কর্মী দিয়ে হাত-পা চেপে ধরে অপারেশন শুরু করেন।
এ সময় রোগী চিৎকার দিলে তার মুখ স্কচটেপ দিয়ে বন্ধ করে স্তন অপারেশন করেন। কোনো রকমে অপারেশন শেষে তাকে হাসপাতালে না রেখে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়।
ঘটনার ৫ দিন পর রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ২২ জুলাই রাতে তাকে কোটালীপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোগী আছিয়া ও তার স্বামী সাব্বির মিয়া গতকাল মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) আগৈলঝাড়া প্রেস ক্লাবে এসে দুস্থ মানবতার হাসপাতালে অপারেশনের কাহিনী সাংবাদিকদের কাছে বর্ণনা করেন।
এ ব্যাপারে দুস্থ মানবতার হাসপাতাল অ্যান্ড প্যাথলজির অভিযুক্ত চিকিৎসক মো. আশরাফুল ইসলাম শাওন সাংবাদিকদের জানান, মেজর কোনো অপারেশন নয় বলে আমি আছিয়ার অপারেশন করেছি। তার অপারেশনে কোনো সমস্যা হয়নি। তাকে অচেতন করা হয়েছিল।
এমবিবিএস চিকিৎসক না হয়েও অপারেশন করার ব্যাপারে উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আলতাফ হোসেন বলেন, আমাদের কাছে এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেব।
আগৈলঝাড়ায় দুস্থ মানবতার হাসপাতাল অ্যান্ড প্যাথলজির পরিচালক ডা. হিরন্ময় হালদার বলেন, আছিয়ার অপারেশনের বিষয়টি বেআইনি ও অমানবিক। আমি একজন চিকিৎসক হিসেবে এ ঘটনা সমর্থন করতে পারি না।
এএম/জেআইএম