গভীর রাতে ফোন দিয়ে স্যার আমাকে হোটেলে যেতে বললেন
নওগাঁ সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মোবাইলে কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে একই স্কুলের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর ওই ছাত্রী বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র (টিসি) নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে তাকে টিসি দেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষকের নাম বেলাল হোসেন। এ ঘটনার পর মেয়েদের এই স্কুলে লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শহরের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান নওগাঁ সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুল। নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরেই তার অবস্থান। দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে।
তবে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শিক্ষকের অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার খবর জানাজানির পর থেকে মেয়েদের স্কুলে লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন স্থানীয় অভিভাবকরা।
ভুক্তভোগী ছাত্রী জানায়, অর্ধবার্ষিকী ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা শেষ করে বাসযোগে বাড়ি ফিরছিলাম। একই বাসে শিক্ষক বেলাল হোসেনও ছিলেন। বাসের মধ্যে আমার কাছ থেকে স্যার মোবাইল নম্বর নেন।
গত শনিবার (১৪ জুলাই) স্কুল চলাকালীন স্যার ফোন করে ইসলাম শিক্ষায় কত পেয়েছি জানতে চান। এরপর ফোন কেটে দেন। ওইদিন রাত ১২টার দিকে স্যার আবার ফোন দেন। এ সময় বিভিন্ন বাজে কথা বলেন। একপর্যায়ে আমাকে ‘মল্লিকা ইন’ হোটেলে যেতে বলেন। এসবে সাড়া না দিলে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন স্যার। সেইসঙ্গে কুপ্রস্তাব দেন। পরদিন আবার স্কুলে আসতে বলেন। স্যারের এসব কথা শুনে পরদিন আমি ভয়ে স্কুলে যাইনি। এরপর দিন বাবাকে বিষয়টি খুলে বলি।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বলেন, অবাক করার বিষয় একজন শিক্ষক হয়ে তার ছাত্রীকে এমন কুপ্রস্তাব দিতে পারে। শিক্ষকের মান কোথায় গিয়ে দাঁড়ালো? ছোট মেয়ে ভয়ে গত দুদিন স্কুলে যায়নি। একজন শিক্ষক কত খারাপ হলে রাত ১২টার দিকে ফোন দিয়ে তার ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়, তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। ওই স্কুলে বাচ্চাদের পড়াশোনা করানো এখন দুশ্চিন্তার বিষয়। জানি, বিদ্যালয় পরিত্যাগের ছাড়পত্র দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। এছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। তবে এর একটা বিহীত হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে জানতে শিক্ষক বেলাল হোসেনের মোবাইলে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি। কয়েকবার কল দিয়ে তিনি ফোন কেটে বন্ধ করে দেন। ফলে এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নওগাঁ সেন্ট্রাল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মহাতাফ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে কোনো ধরনের অভিযোগ পাইনি। মেয়ে ও তার অভিভাবক স্কুলে এসেছিলেন। মেয়ে স্কুলে পড়তে চাইছে না। আর তারা এখানে মেয়েকে পড়াতে চাইছেন না। তাই তাকে টিসি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, যদি এমন কোনো বিষয় থাকে তাহলে ছাত্রীর অভিভাবক আমাকে বিষয়টি বলতে পারতেন। যেহেতু ছাত্রীর পরিবার অভিযোগ তুলেছেন, স্কুলের কমিটির সদস্যরা আছেন; তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
আব্বাস আলী/এএম/এমএস