অবিক্রিত উফশী বীজ নিয়ে বিপাকে ডিলাররা
বাগেরহাটের শরণখোলায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) উচ্চ ফলনশীল (উফশী) বীজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ডিলাররা। উফশী জাতের ধানের বীজতলা তৈরির সময় শেষ হলেও বিক্রি না হওয়া ৪ মেট্রিক টন বীজ এখন ডিলারদের গলার কাটায় পরিণত হয়েছে। অবিক্রিত বীজ সিদ্ধ করে চাল হিসেবে বিক্রি করলেও মোটা অংকের লোকসান গুনতে হবে ডিলারদের।
একদিকে জলাবদ্ধতার কারণে ব্রি-৫২ জাতের মোটা ধানের চাহিদা অন্যদিকে সরকার উফশী জাত চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে পুরাতন জাত সরবরাহ কমিয়ে দেয়ায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ ও ডিলার সূত্রে জানা গেছে।
শরণখোলা উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শরণখোলায় এ বছর ৯ হাজার ২৫০ হেক্টর জমির মধ্যে ৪ হাজার হেক্টর উচ্চ ফলনশীল জাত চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী উপজেলার চারটি ইউনিয়নে নিযুক্ত চারজন ডিলারের মাধ্যমে কৃষকদের বীজ সরবরাহ করে বিএডিসি।
শরণখোলায় বিএডিসি’র ডিলার স্বপন কুমার নাগ, মো. সরোয়ার হোসেন ও শহিদুল ইসলাম জানান, এ বছর কৃষকদের চাহিদা ব্রি-৫২। কিন্তু সরবরাহ পাওয়া গেছে খুবই কম।
এদিকে চলতি মৌসুমে উফশী জাতের এ ধানের বীজতলা তৈরির সময় জুন মাসেই শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু তাদের গুদামে এখনও ৪ মেট্রিকটন ব্রিজ অবিক্রিত রয়ে গেছে। ওই বীজ এ বছর আর কোনো কাজে আসবে না। বাধ্য হয়ে এখন এই বীজ ধান চাল বানিয়ে বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। এরপরও তাদের মোটা অংকের লোকসান গুনতে হবে।
উপজেলার রাজৈর গ্রামের চাষি বাবুল হাওলাদার, আমড়াগাছিয়ার জামাল হাওলাদার, উত্তর রাজাপুরের আলামীন ও তাফালবাড়ির মিলন হালদার জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইস গেটগুলো বন্ধ থাকায় মাঠে পানি জমে রয়েছে। যার কারণে পুরাতন ব্রি-৫২ জাত ছাড়া জলাবদ্ধতায় উফশী জাতের ধান চাষাবাদ সম্ভব না। তাই তারা উফশী জাত না কিনে বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫২ জাত সংগ্রহ করে বীজ তলা তৈরি করেছেন।
শরণখোলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌমিত্র সরকার জানান, জলাবদ্ধতার কারণে এ বছর চাষিরা ব্রি-৫২ জাতের মোটা ধান চাষে আগ্রহী হওয়ায় উচ্চ ফলনশীল ৪৯ জাতের কিছু বীজ ডিলারদের কাছে অবিক্রিত রয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. লিয়াকত আলী জানান, সরকার চাষিদের উচ্চ ফলনশীল জাত চাষে উদ্বুদ্ধ করতে ব্রি-৫২ জাতের পুরাতন বীজ সরবরাহ কমানোর চেষ্টা করছে। শরণখোলায় এ বছর ব্রি-৫২ জাতের চাহিদা বেশি থাকায় উফশী জাতের বীজ অবিক্রিত রয়েছে।
শওকত বাবু/আরএআর/জেআইএম