পরশুরামে বন্যায় ১৭ কি.মি সড়ক বিলীন
পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে দুই দফার বন্যায় ফেনীর পরশুরামে ভেঙে পড়েছে সড়ক ব্যবস্থা। বন্যার পানি নেমে গেলেও ভঙ্গুর যোগাযোগ ব্যবস্থা নতুন করে ভোগান্তির সৃষ্টি করেছে।
বেশ কয়েকটি এলাকায় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সড়ক। ফলে বন্যা আক্রান্ত এলাকায় বিধ্বস্ত সড়কে স্থানীয়দের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। সড়ক বিভাগ থেকে জানানো হয় উপজেলা জুড়ে বিভিন্নস্থানে প্রায় ১৭ কিলোমিটার সড়ক ভেঙে গেছে। এসব সড়ক মেরামত করতে কমপক্ষে ২ কোটি টাকা লাগতে পারে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও সড়ক বিভাগ থেকে জানা যায়, গত ১২ জুন পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে উপজেলার মুহুরি, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ৮ স্থানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভয়াবহ ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় অন্তত ২০ গ্রাম। বন্যার পানির তোড়ে প্রায় ১১টি কাঁচা ও পাকা সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙে যায়। গত ২৩ ও ২৪ জুন টানা বৃষ্টিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙনকবলিত স্থানগুলো দিয়ে পানি ঢুকে পুনরায় বন্যার সৃষ্টি হয়।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সূত্র জানায়, দুই দফায় বন্যায় পরশুরামে প্রায় ১১টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সড়কের ১৭ কিলোমিটার বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে সুবার বাজার-মনিপুর-পশ্চিম সাহেবনগর, কালির বাজার সড়কে ৫০ মিটার, সুবার বাজার-ডিএম সাহেবনগর সড়কে ৩০ মিটার, দক্ষিণ কাউতলী সড়কে ১৫ মিটার, দূর্গাপুর-রতনপুর-বেকের বাজার সড়কে ১০০ মিটার, চারিগ্রাম-শালধর সড়কে ৩০ মিটার, রাজষপুর বাজার-শালধর বাজার-চারিগ্রাম সাতকুচিয়া কালাপোল-চাঁনগাজি বাজার-নরনীয়া-বক্সমাহমুদ সড়কে ৭ কিলোমিটার, শালধর বাজার-চন্দনা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয় সড়কে ১.৩৬ কিলোমিটার, পরশুরাম বাজার-গুথুমা চৌমুড়ি বাজার-গুথুমা বিওপি সড়কে ২০ মিটার, পরশুরাম-কালির বাজার, ধনীকুন্ডা বাজার, শালধর ইউপি বাজার-মালিপাথর-নিলক্ষ্মী-ফুলগাজী সড়কে ৪ কিলোমিটার, নাছির উদ্দিন চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় সড়কে ২.৫ কিলোমিটার ও মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান সড়কে ২ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দূর্গাপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, রামপুর-রতনপুর-দূর্গাপুরে দুই থেকে তিন কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক স্থানে সড়কের অংশ ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে নানা ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
রামপুর গ্রামের মো. আবু সাইদ জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে চলাচল করা দুষ্কর। ঈদের পর থেকে ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে পারছি না। এসব এলাকার অনেকেই বন্যার আগে দৈনন্দিন কাজ সারতে জেলা শহরে যাতায়াত করলেও বর্তমানে সড়ক নষ্ট থাকায় পরিবহন সংকটে যাতায়াত করতে পারছেন না।
এদিকে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম পাটোয়ারী রাজষপুর বিওপি সড়ক, দূর্গাপুর-রামপুর মেম্বার বাড়ি সড়ক ও গুথুমা আবদুল্লাহ শাহ মাজার সড়ক উন্নয়ন কাজের প্রাক্কলন প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
পরশুরাম উপজেলার প্রকৌশলী মনির হায়দার জানান, বন্যার সময় পিচঢালা সড়কের ওপর দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হয়ে সড়কগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ৩টি সড়ক উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্দেশনা এসেছে।
এএম/পিআর