নিখোঁজের ২ বছর পর মাকে ফিরে পেলেন ছেলে
হারিয়ে যাওয়ার ২২ মাস পর পরিবারের কাছে ফিরলেন মানসিক ভারসাম্যহীন ৬০ বছরের হেনা বেগম। গতকাল শুক্রবার রাতে ছেলের কাছে মাকে হস্তান্তর করে মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোর।
২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাহাড়পুর এলাকা থেকে হারিয়ে যান হেনা বেগম। প্রায় দুই বছর পর মাকে ফিরে পেলেন ছেলে।
রাইটস যশোর ও হেনা বেগমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে ২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরতে পারেননি তিনি। তার সন্তান ও পরিজনরা স্থানীয়ভাবে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন।
২০১৭ সালের ১১ নভেম্বর যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগরে হেনা বেগমকে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরতে দেখে আশ্রয় দেন স্থানীয় বাসিন্দা জনি হোসেন।
এরপর তাকে মানসিক রোগী বুঝতে পেরে স্থানীয়রা ঝিকরগাছা সমাজসেবা অফিসারের সহযোগিতায় ঝিকরগাছা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। থানা পুলিশ হেনা বেগমের সঠিক ঠিকানা জানার চেষ্টা করে সফল না হওয়ায় মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। রাইটস যশোর তাকে থানা থেকে জিডি মূলে জিম্মায় গ্রহণ করে এবং স্থানীয় ঢাকা আহছানিয়া মিশনের শেল্টারহোমে রাখার ব্যবস্থা করে।
পরে রাইটস যশোর হেনাকে কাউন্সেলিং করার মাধ্যমে তার কাছ থেকে সঠিক ঠিকানা বের করে যোগাযোগ শুরু করে পরিবারের সঙ্গে। এ কাজে নাগরপুর থানা পুলিশের ওসি ও এসআই শংকর নন্দী সহযোগিতা করেন।
সংবাদ পেয়ে হেনা বেগমের ছেলে সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা বাবুল হোসেন স্বজনদের নিয়ে রাইটস যশোর কার্যালয়ে আসেন। এরপর সব প্রমাণপত্র যাচাই শেষে শুক্রবার রাতে ছেলের কাছে হস্তান্তর করা হয় হেনা বেগমকে। মাকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরেন ছেলে। এ সময় দুইজনের চোখেই জল গড়িয়ে পড়ে।
মাকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে ছেলে বাবুল হোসেন বলেন, কত আনন্দ লাগছে তা ভাষায় বোঝাতে পারব না। আমার মাথার ওপর ছায়া ছিল না। অনেকদিন পর সেই ছায়া পেলাম। আর কোনো শূন্যতা আমাকে কষ্ট দেবে না। আজ যেন সব খুঁজে পেলাম আমি।
এএম/জেআইএম