সেবা মিলছে না স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরি নম্বরে
২০০৯ সালের মে মাস থেকে দেশজুড়ে শুরু হয় মোবাইলে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা। তখন থেকেই রাজশাহীর ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বিভিন্ন হাসপাতালে এ সেবা চালু হয়। প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে নির্ধারিত মোবাইল নম্বর দেয়া হয় ওই সময়। কথা ছিলো এসব নম্বরে সমস্যার কথা জানিয়ে তাৎক্ষণিক জরুরি চিকিৎসা সেবা পাবেন রোগীরা। কিন্তু এতদিনেও ফোনে পরামর্শ পাচ্ছেন না এখানকার সাধারণ মানুষ।
রাজশাহীর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর নির্ধারিত মোবাইল নম্বরগুলো বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকছে। অনেক সময় ফোন করেও সাড়া পাচ্ছেন না নাগরিকরা। এনিয়ে নেই প্রচারণাও। আর এতেই ভেস্তে গেছে সরকারের জরুরি এ স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, মোবাইল নম্বরগুলো বন্ধ থাকছে দীর্ঘদিন ধরে। যেগুলো চালু সেগুলোতে ফোন দিয়েও রিসিভ হয় না। কোনো কোনো হাসপাতালে ডাক্তারের পরিবর্তে আয়া, নার্স ও পিয়নরা ফোন রিসিভ করে থাকেন। তারা সেবা না দিয়ে রোগীকে হাসপাতালে ডেকে নেন। ফলে সার্বক্ষণিক এ সেবা দেয়ার কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না।
জানা গেছে, কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ভেস্তে গেছে এ কার্যক্রম। নির্ধারিত ফোন নম্বরগুলো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রদর্শন ও প্রচারে নির্দেশনা থাকলেও তা নেয়া হয়নি। জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জনগণকে নম্বরটি সম্পর্কে অবহিত করাও হয়নি। জানতে না পেরে সেবার আওতায় আসছে না সাধারণ মানুষ।
বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মোবাইল নম্বরে (০১৭৩০৩২৪৭০১) ফোন দিয়ে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। বন্ধ পাওয়া গেছে জেলার গোদাগাড়ী (০১৭৩০-৩২৪৭০৪), তানোর (০১৭৩০-৩২৪৭০৮) এবং চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের (০১৭৩০-৩২৪৭০২) মোবাইল নম্বরও।
বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ০১৭৩০-৩২৪৭০০ নম্বরে যোগাযোগ করা হলে মেডিকেল অফিসার সারোয়ার আলম বলেন, মোবাইলে স্বাস্থ্যসেবা দিতে ২৪ ঘণ্টাই তারা ফোন খোলা রাখেন। প্রতিদিন বেশ কিছু রোগী মোবাইল ফোনে স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ নেন।
মোহনপুর উপজেলার ০১৭৩০-৩২৪৭০৫ নম্বরে পাওয়া যায় মেডিকেল অফিসার ডা. আমজাদ হোসেনকে। তিনি বলেন, মোবাইল ফোনে রোগীদের তেমন সাড়া নেই। মাঝে মাঝে ২-১ জন হয়তো চিকিৎসা চায়। এ নিয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
দুর্গাপুর উপজেলা হাসপাতালের ০১৭৩০-৩২৪৭০৩ নম্বরে যোগাযোগ করা হলে পাওয়া যায় দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. সানজিদুল ইসলাম সবুজকে।
তিনি বলেন, এ নম্বরে তারা স্বাস্থ্যসেবা দেন না। কেবল দাফতরিক যোগাযোগের কাজেই এটি ব্যবহার করেন। অন্য আরেকটি নম্বর দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্যসেবায়। সেটিতে যোগাযোগ করে সেবা পাচ্ছে রোগীরা।
তবে জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই মোবাইলে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা চালু রয়েছে বলে দাবি করেছেন রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. সঞ্জিত কুমার সাহা।
তিনি বলেন, যে মোবাইল নম্বরগুলো বন্ধ, সেগুলো সাময়িক। নম্বরগুলো শিগগিরই চালু করা হবে। নাগরিকদের আগ্রহী করতে প্রয়োজনীয় প্রচারণা চলছে বলেও দাবি করেন সিভিল সার্জন।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এফএ/এমএস