২৫ হাজার মানুষের দুর্ভোগের কারণ একটি ব্রিজ
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের পদ্মার কোল নামক হিরু মোল্লার ঘাটে একটি ব্রিজের জন্য ইউনিয়নের ৪ ওয়ার্ডের হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। পদ্মার চরের ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য ঘাট এলাকায় ১৫০ গজ লম্বা একটি বাঁশের মাচা থাকলেও সেটি এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে মাচা নিচ দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তবে বর্ষা মৌসুমে নৌকা বা ট্রলারে চলাচল করতে হয় তাদের। তাই ভুক্তভোগী জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী মাচার স্থানে একটি ব্রিজ করে দিয়ে স্থায়ীভাবে চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নটির প্রায় অর্ধেক অংশ পদ্মার নদীর কোলের চরের ওপর (৩, ৬, ৮ ও ৯) নং ওয়ার্ড। সেখানে ৩টি স্কুল, কয়েকটি হাট-বাজারসহ রয়েছে কয়েক হাজার পরিবারের বসবাস। ওই ৪ ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের চলাচলের সুবিধার জন্য ৩ বছর আগে হিরু মোল্লার ঘাট নামক স্থানে একটি বাঁশের মাচা তৈরি করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন মাচাটি সংস্কার না করায় অনেক অংশ ভেঙে যাওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আগে এই মাচা দিয়ে হাজার হাজার মানুষ, রিকসা, ভ্যান, মোটর সাইকেল, বাই-সাইকেল পারাপার হতো। কিন্তু এখন বাধ্য হয়ে মাচালীর নিচ দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। সামনে বর্ষা মৌসুমে তখন একমাত্র ভরসা নৌকা বা ট্রলার।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা জানান, একটি ব্রিজের জন্য তাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। পদ্মার চরে তাদের আবাস্থল হওয়ায় অবহেলিত তারা। যাতায়াতের জন্য বাঁশের মাচা ছিল সেটিরও ভেঙে গেছে। দৈনিক প্রয়োজনীয় কাজ করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু সামনের বর্ষা মৌসুমে কীভাবে যাতায়াত করবেন সেটাই চিন্তার বিষয়। তাই বাঁশের মাচার স্থানে একটি ব্রিজ এবং সময়িক চলাচলের জন্য মাচাটি সংস্কারেরও দাবি জানান।
রতনদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেহেদী হাসিনা পারভীন নিলুফা জানান, হিরু মোল্লার ঘাটে যে বাঁশের সাঁকো আছে সেটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩-৪টি স্কুলের শিক্ষার্থী ও হাজার হাজার এলাকাবাসী পারাপার হয়। তার ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ওই চরে বসবাস করে। জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি দ্রুত একটি ব্রিজ নির্মাণের।
কালুখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম জানান, কালুখালীর রতনদিয়া ইউনিয়নের হিরু মোল্লার ঘাট এলাকার পদ্মার কোলে একটি ব্রিজের প্রয়োজন। তাই দ্রুত এ স্থানের একটি ব্রিজ নির্মাণের অনুমোদন দেবে কর্তৃপক্ষ এবং ব্রিজটির কাজ বাস্তবায়ন হলে ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবে।
কালুখালী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ননী গোপাল দাস জানান, হিরু মোল্লার ঘাট থেকে মধাবপুর বাজার সড়কে এলজিইডি একটি বড় ব্রিজ করার প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ ব্রিজটির দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১০০ মিটারের বেশি। খুব দ্রুত মাটি পরীক্ষা করা হবে আর এরপর অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ হলে আগামী বছর হিরু মোল্লার ঘাটে ব্রিজ তৈরির কাজ শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। ব্রিজটি হলে চরের প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ উপকৃত হবে এবং তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ ভালো হবে।
রুবেলুর রহমান/আরএ/এমএস