কক্সবাজারে সাগরপথে ফের মানব পাচার
কক্সবাজারের বিভিন্ন উপকূলের সাগরপথে ফের মানব পাচার শুরু করেছে একটি চক্র। প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকার পর আবারও গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে টেকনাফের বাহারছড়ার শামলাপুর নৌঘাট দিয়ে আছারবনিয়ার জনৈক মমতাজের ট্রলারে করে প্রায় ৫০ জনের একটি দল মালেয়শিয়ায় উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে।
টেকনাফের বাহারছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য সোনা আলী বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে দালালদের সহযোগিতায় চারজন স্থানীয় কিশোর ও যুবক এবং ৪০-৪৫ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের একটি দল শামলাপুর থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে মালেয়শিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। বিষয়টি জানার পর সেদিন রাতেই আমি পুলিশকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, উত্তর শীলখালির সৌদি প্রবাসী আনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী শামলা বেগম ও শামলাপুরের আছারবনিয়ার রহমত উল্লাহর সহযোগিতায় একই এলাকার মমতাজের ট্রলারে করে দলটি সাগরপথে মালেয়শিয়ার উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছে।
বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড সদস্য আনোয়ারা বেগম বলেন, পাচার হওয়াদের মাঝে পাঁচজন স্থানীয় যুবক ছিল। এদের মধ্যে একজন ফেরত এসেছেন। বাকিরা হলেন- উত্তর শিলখালীর আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে আজিজুল ইসলাম বাবুল (১৭), নুরুল ইসলাম প্রকাশ আব্দু শুক্কুরের ছেলে রহিম উদ্দিন (২২) নুরুল কবিরের ছেলে মুফিজুর রহমান (১৮), মোজাহারের ছেলে ধলইয়া (১৫)।
স্থানীয় চৌকিদার নুরুল হক প্রকাশ লেইট্টা বলেন, সেদিন রাতে পাচার হওয়া ওই চার যুবকের আমার রাস্তায় দেখা হয়। তাদের সঙ্গে আরও ৬-৭ জন লোক ছিল। তখন তারা আমাকে বলেছিল- তারা পাসপোর্ট করতে চট্টগ্রাম যাচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি আমার সন্দেহ হলে আমি তাদের পিছু নেই। তাদেরকে ট্রলারে উঠতে দেখি। পরে বিষয়টি মেম্বারকে অবহিত করি।
বাহারছড়ার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর কাঞ্চন কান্তি দাশ বলেন, খবর পেয়ে সেদিন ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ কাউকে পায়নি।
তিনি আরও বলেন, মানব পাচারের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স রয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। মাস চারেক আগেও মানব পাচারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরাজুল হক টুটুল বলেন, শামলাপুর থেকে মানব পাচারের বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সায়ীদ আলমগীর/আরএআর/আরআইপি