মির্জাপুরে বাল্যবিয়ে বন্ধে ইউএনওর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাল্যবিয়ে বন্ধে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীন। এবার তিনি নিজ হাতে ‘বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করি, সুখী জীবন গড়ি, বিয়ের আইনানুগ বয়স : পুরুষ-, মেয়ে-১৮ বছর। বাল্য বিবাহকে না বলুন। আপনার সন্তানকে মানবসম্পদে পরিণত হওয়ার সুযোগ দিন’ এই শ্লোগান সম্বলিত স্টিকার বিভিন্ন যানবাহনে লাগিয়েছেন। তার নেতৃত্বে বাল্য বিবাহ বন্ধে মির্জাপুরে একের পর এক চলছে নানা সচেতনামূলক কর্মকাণ্ড।
বাল্যবিয়ে বন্ধে রোববার সকালে মির্জাপুর পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তিনি অফিসসহকারীদের নিয়ে সিএনজি চালিত অটো রিকশা, ইজিবাইক, মেক্সিসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়কে চালাচলরত যানবাহনে বাল্যবিয়ে বিরোধী সচেতনামূলক এই স্টিকার লাগানো হয়। এ সময় তিনি এসব যানবাহনের চালক, হেলপার ও যাত্রীদের সঙ্গেও বাল্যবিয়ে বিরোধী সচেতনামূলক আলোচনা করেন।
এছাড়া দুপুরে তিনি উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের সাটিয়াচড়া শিবনাথ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে কিশোরী ক্লাবের উদ্যোগে বাল্যবিয়ে ও ইভটিজিং সম্পর্কে সচেতনামূলক সভা করেন। পরে ওই ক্লাবের দক্ষ সদস্যদের মাঝে ছাতা ও মগ বিতরণ করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, ইউএনও ইসরাত সাদমীন প্রায় ১৭ মাস আগে মির্জাপুরে যোগদান করেন। এর পর থেকেই তিনি তার প্রচেষ্টায় মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে বেশ সচেতন করে তুলেছেন। গত ১৭ মাসে তিনি উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশত বাল্য বিয়ে রোধ করেছেন।
এছাড়া তিনি উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে সচেতনতামূলক সভা, কাজী ও পুরোহিতদের নিয়ে কর্মশালা, উদ্বুদ্ধকরণ সভা, কিশোরী ক্লাব গঠন, ছাত্রীদের নিয়ে ফুটবল খেলা, লিফলেট বিতরণ, কুংফু প্রশিক্ষণ ও মাইকিংসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন।
মির্জাপুর উপজেলাকে বাল্যবিবাহমুক্ত করতেই এই প্রচেষ্টা উল্লেখ করে ইসরাত সাদমীন বলেন, প্রত্যেক শিশুর একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ রয়েছে। পরিবারের পাশাপাশি তার সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার। একটি কন্যাশিশুর জীবন বাল্যবিয়ের মাধ্যমে শেষ হবে তা মেনে নেয়া যায় না। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মা জন্ম দিতে পারেন সুস্থ সুন্দর সবল শিশু। যে শিশু হবে উন্নত বাংলাদেশের সুনাগরিক।
এরশাদ/এমএমজেড/জেআইএম