আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বদিসহ অনুপস্থিত অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি
দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবা সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কক্সবাজারের টেকনাফ পৌর কাউন্সিলর একরাম ও ইউপি সদস্য আকতার কামাল নিহত হওয়ার পর চরম আতঙ্কে রয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং অন্য গোয়েন্দা সংস্থার করা তালিকায় সিংভাগ জনপ্রতিনিধির নাম থাকা এবং দুই সহকর্মীর মৃত্যুর কারণে এ আতঙ্ক আরও বেড়েছে। সেই সঙ্গে গা ঢাকা দিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।
এ আতঙ্কের ছাপ লক্ষ্য করা গেছে বুধবার অনুষ্ঠিত টেকনাফ উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও। উপজেলা শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এমপিসহ ১০ জনপ্রতিনিধি উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও বৈঠকে মাত্র দুইজন জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
সভায় কমিটির উপদেষ্টা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আহমদ, টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী মো. ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী রফিক আহমদসহ আটজন জনপ্রতিনিধির অনুপস্থিতি নিয়ে গুঞ্জন ওঠেছে। কারণ তারা কেউ উপজেলা শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন না।
টেকনাফ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রণয় কুমার চাকমার সভাপতিত্বে সভায় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে কেবল উপস্থিত ছিলেন- হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা নুর আহমদ আনোয়ারী ও উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান তাহেরা খানম মুন্নি।
সভায় তাদের অনুপস্থিতির পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কে বা কারা বৈঠকে আসেনি তাদের কর্মকাণ্ড ও আয়ের উৎস কি এসব বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ করছেন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় সূত্রমতে, অনুপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই ইয়াবা ব্যবসায় পুলিশের তালিকাভুক্ত। এ কারণে তারা সভায় অনুপস্থিত ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জনপ্রতিনিধি বলেন, এলাকায় বলতে গেলে একেবারে পরিচ্ছন্ন জনপ্রতিনিধি ছিলেন একরাম ভাই। তিনি যেখানে বাঁচতে পারেননি, সেখানে যারা তালিকায় আছেন বা ততোটা ক্ষমতাধর নয়-তাদের অবস্থা কি হতে পারে তা সহজে অনুমেয়। তাই এ সময়টাতে নিজেকে আড়াল করে রাখতে পারায় উত্তম। এ চিন্তা থেকেই হয়তো শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য জনপ্রতিনিধিরা অনুপস্থিত ছিলেন।
আসলে কি কারণে তারা অনুপস্থিত ছিলেন তা জানতে এমপি আবদুর রহমান বদি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ এবং পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তারা কেউ ফোন না ধরায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সভায় উপস্থিত টেকনাফ থানা পুলিশের ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া রাতে জানান, সভায় জনপ্রতিনিধিদের অনেকে অনুপস্থিত থাকলেও কমিটির সদস্য উপজেলার সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় চলমান মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানকে স্বাগত জানানো হয়।
সায়ীদ আলমগীর/এএম/জেআইএম