ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

‘বন্দুকযুদ্ধে’ রাজধানীসহ সারাদেশে ১০ মাদক ব্যবসায়ী নিহত

জাগো নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৮:৪১ এএম, ২৫ মে ২০১৮

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১০ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার ভোরে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এতে র‌্যাব ও পুলিশের ১৭ সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধারের দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় এলিটফোর্স র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কামরুল নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে র‌্যাব-২ এর একটি দল মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে ওই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হন। আহত হয়েছেন দুই র‌্যাব সদস্য।

র‌্যাবের দফতর থেকে পাঠানো ক্ষুদেবার্তায় জানানো হয়, র‌্যাব-২ এর একটি দল ও মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। এতে তেজগাঁও রেললাইন বস্তি এবং মহাখালী সাততলা বস্তি এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী কামরুল নিহত হন। নিহত কামরুল ১৫টির অধিক মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

এদিকে কুমিল্লায় থানা ও ডিবি পুলিশের মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানে কামাল হোসেন ওরফে ফেন্সি কামাল (৫১) নামে তালিকাভুক্ত এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণপাড়া সড়কের বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের মহিষমারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ কেজি গাঁজা ও একটি পাইপগান উদ্ধার করা হয়েছে।

অভিযানে ডিবির এসআই নন্দন চন্দ্র সরকার, এএসআই সাহাবুল হোসেন ও কনস্টেবল সুমন মিয়া আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে হানিফ ও ইলিয়াস নামের দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। নিহত ওই মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বুড়িচং ও কোতয়ালি মডেল থানায় ১২টির অধিক মাদকের মামলা রয়েছে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার আড়পাড়া নামক স্থানে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শামীম সরদার (৪৫) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১টি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, ৫০০ পিস ইয়াবা ও ১৭ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শামীমের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় ৯টি মাদক মামলা রয়েছে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, রাতে মাদক উদ্ধারে উপজেলার পৌর এলাকার আড়পাড়া নামক স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ শুরু হয়। পরে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শামীম সরদারকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কক্সবাজারের মহেশখালীর পাহাড়ি এলাকা বড় মহেশখালীর মুন্সির ডেইল পাহাড়তলী গ্রামে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মোস্তাক আহমদ (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ত্রিমুখী গোলাগুলি হওয়ায় কার গুলিতে মোস্তাক মারা গেছেন তা নিশ্চিত না হলেও পুলিশের দাবি দু’গ্রুপের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ই মোস্তাক নিহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এক হাজার পিস ইয়াবা, ৭ রাউন্ড কার্তুজসহ ৪টি থ্রি কোয়ার্টার বন্দুক জব্দ করেছে। মোস্তাকের বিরুদ্ধে দুটি অস্ত্র মামলা, একটি পুলিশ অ্যাসল্ট ও আরেকটি মাদক মামলা রয়েছে।

মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, রাত ১০টার দিকে বড় মহেশখালীর মুন্সির ডেইল পাহাড়তলী এলাকায় গোলাগুলির সংবাদ পেয়ে থানার এএসআই সঞ্জীব দত্ত, জুয়েলসহ বেশ কজন অফিসার ও সঙ্গীয় ফোর্স অভিযানে যায়। এসময় দুর্বৃত্তরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে।

অপরদিকে কক্সবাজার মেরিনড্রাইভ রোড থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ‘ইয়াবার গডফাদার’ আখতার কামালের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা, বন্দুক ও গুলি পাওয়া গেছে।

নিহত আখতার কামাল উখিয়া-টেকনাফের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির বড় বোন শামসুন্নাহারের দেবর এবং টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। পুলিশের ধারণা, প্রতিপক্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোলাগুলিতে আখতার কামালের মৃত্যু হয়েছে।

মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির আইসি পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম জানান, ভোরে দরিয়ানগর ব্রিজ এলাকায় গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশ টহলে যায়। এক পর্যায়ে সেখানে সড়কের পাশে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ মরদেহ দেখতে পায়। মরদেহের পাশে এক হাজার পিস ইয়াবা, ১টি এলজি ও ৪ রাউন্ড গুলি পড়েছিল। পরে স্থানীয়রা এসে মরদেহটি এমপি বদির বেয়াই আকতার কামালের বলে শনাক্ত করেন।

নেত্রকোণা সদরের মদনপুর ইউনিয়নের মনাং এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অজ্ঞাত পরিচয়ের দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে ওই ইউনিয়নের মনাং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ৭০৫ গ্রাম হেরোইন, ৩ হাজার ৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ২টি পাইপগান উদ্ধার করে পুলিশ।

মডেল থানার ওসি মো. বোরহান উদ্দিন খান জানান, মাদক কেনাবেচা হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে ওই এলাকায় পুলিশের একটি টিম অভিযানে যায়। উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছুড়লে পুলিশের দুই কর্মকর্তা ও এক পুলিশ সদস্য আহত হন। এ সময় দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হন।

এছাড়া শেরপুরে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালু ডাকাত পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইউসুপ আলী নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোরে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি শুটার গান ও ৭০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।

কলারোয়া থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ জানান, গভীর রাতে সিমান্তবর্তী রামকৃষ্ণপুর বাড়ালী গ্রামে মাদক ব্যবসায়ী দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে জানতে পেরে ফোর্স পাঠানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ছুড়লে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে আহত ইউছুপ আলীকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জুয়েল মিয়া নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় পাইপগান, ২ রাউন্ড গুলি ও ৫০০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে গাইবান্ধা-বালাসীঘাট সড়কের কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ফলিয়ার ব্রিজ মৎস্য প্রকল্প এলাকায় এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তিন পুলিশ সদস্য।

এফএ/এমএস

আরও পড়ুন