মহাসড়কে উঠতে মানা : বেকায়দায় টাঙ্গাইলের সিএনজি চালকরা
মহাসড়কগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। ১ আগস্ট থেকে মহাসড়কে সিএনজি চলাচল বন্ধ কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশের টহলে মহাসড়কে অনেকটাই কমে এসেছে সিএনজি-অটোরিকশা চলাচল।
টাঙ্গাইলের পঞ্চাশ শতাংশ সিএনজি চলতো মহাসড়কে। বাকি পঞ্চাশ শতাংশ সিএনজি চলতো বিভিন্ন লোকাল সড়কগুলোতে। বর্তমানে মহাসড়কে সিএনজি চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণার পর থেকে লোকাল সড়কগুলোতে সিএনজির চাপ বেড়েছে দ্বিগুণ। মহাসড়কের প্রবেশ পথে সিএনজির ভিড় দেখা গেলেও পুলিশি আতঙ্কে অধিকাংশ সিএনজি মহাসড়কে ঢুকতে সাহস পাচ্ছে না। ফলে বন্ধের উপক্রম হয়েছে জেলার কয়েক হাজার সিএনজি।
এদিকে অধিকাংশ সিএনজি গ্যাস পাম্প মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়াতে গ্যাস সংগ্রহ না করতে পেরে লোকাল সড়কগুলোতেও সিএনজি চালাতে পারছেন না চালকরা। এতে করে কয়েক হাজার সিএনজি চালক বেকার হয়ে পড়েছে। এতে বেকায়দায় পড়েছেন সিএনজি চালক ও মালিক পক্ষ। আর দুর্ভোগ বেড়েছে যাত্রীদের।
সিএনজি চালক আল-আমিন জাগো নিউজকে বলেন, মহাসড়ক ব্যবহার করতে না পেরে অধিকাংশ রিজার্ভ টিপ বন্ধ হয়ে গেছে। লোকাল সড়কে সিএনজি চাপ থাকায় দিনে তিন চারটির বেশি টিপ পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে কয়েকজন ভাড়াটে সিএনজি চালক বলেন, লোকাল সড়কে সিএনজি বেশি থাকায় প্রতিদিনের উপার্জন কমে এসেছে অর্ধেকে।
বর্তমানে যে উপার্জন হচ্ছে তাতে মালিকের প্রতিদিনের জমা ৫শ টাকা দেওয়ার পর চালকের পারিশ্রমিক থাকছে না। এদিকে মহাসড়কে সিএনজি-অটোরিকশা চলাচল কমায় দুর্ঘটনা কমতে পারে মন্তব্য করে স্থানীয়রা স্বস্তি পেলেও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মহাসড়কে পর্যাপ্ত লোকাল বাস নেই। এরপর সিএনজি চলাচল কমাতে লোকাল যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে।
পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, অনেক সময় রাতে সিএনজির মাধ্যমে হাইওয়ে সড়কে তদারকি করা হয়। বর্তমানে তাদেরও বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে।
টাঙ্গাইল জেলা অটোরিকশা অটো টেম্পো সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক মহসিন সিকদার জাগো নিউজকে বলেন, সিএনজি চালকদের কোনো প্রকার আলোচনা ছাড়াই মহাসড়কে উঠতে দিচ্ছে না। আমাদের সামান্য কোনো কিছু ঘটলে পুলিশ আমাদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা জরিমানা নিচ্ছে। এ অবস্থায় আমাদের অধিকাংশ গাড়ি চালকরা গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা গাড়ি কিনে আনার সময় সরকারকে কর দিয়েছি, কর দেওয়ার পরও কেন আমাদেরকে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না?
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি, মহাসড়কে দুই পাশের রাস্তা প্রশস্ত করে বিকল্প ব্যবস্থা করা হোক। এছাড়া মহাসড়কের যেসকল স্থানে ক্রস করতে হয় সেসব স্থানে ওভার পাস করা হোক। অনতিবিলম্বে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ৪ লেন করা, সকল প্রকার সিএনজি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করারও দাবি জানান তিনি। বিকল্প পদ্ধতির আগ পর্যন্ত মহাসড়কে সিএনজি চলাচলের অনুমতির জোর দাবি করেন।
এমজেড/এমএস