আমদানি বাড়লেও কমেনি পেঁয়াজের দাম
সরকার শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ দিলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৭ টাকার পেঁয়াজ বেড়ে এখন ৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। অতিরিক্ত মুনাফালোভী বিক্রেতাদের কারসাজির কারণে অস্বাভাবিক হারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
রমজানে বাজার সহনশীল রাখতে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ব্যাপক হারে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। পেঁয়াজ আমদানি গতিশীল করতে বেনাপোল বন্দর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার থেকে এ পর্যন্ত বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৭ দিনে ৩০৬টি ট্রাকে ১০২টি চালানের মাধ্যমে ভারত থেকে ১০ হাজার ৭৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। রমজান উপলক্ষে দিন দিন আমদানি আরও বাড়ছে। ভারত থেকে নাসিক, হাসখালি, বেলেডাঙ্গা ও খড়কপুর জাতের পেঁয়াজ আমদানি হয়ে থাকে। এদেশে নাসিকের পেঁয়াজের চাহিদা বেশি।
আগে ১০ শতাংশ শুল্ক-কর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হত। তখন কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত খুচরা বাজারে কিনতে হত সাধারণ ক্রেতাদের। পেঁয়াজের দাম ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার সাধ্যের মধ্যে রাখতে ২০১৬ সালের রোজার আগে সরকার পেঁয়াজের উপর আমদানি শুল্ক-কর প্রত্যাহার করেন। তখন থেকে আর শুল্ক-কর সংযোজন হয়নি। তবে শুল্ক-কর উঠলেও অতিরিক্ত লাভে বিক্রেতাদের সিন্ডিকেটের কারণে হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হারে পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে।
ভারতের রফতানি মূল্যে প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে ২০৫ মার্কিন ডলার মূল্যে। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রতিটনের মূল্য দাঁড়ায় ১৭ হাজার ১৫ টাকা। কেজিপ্রতি আমদানি খরচ পড়ছে প্রায় ১৮ টাকা। এলসি খরচসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর পর্যন্ত পেঁয়াজ পৌঁছাতে খরচ পড়ছে প্রতিকেজি ১৯ টাকা। আমদানি হওয়া পেঁয়াজ বন্দর থেকে পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৩০ টাকা।
আমদানিকারক শাহিন রেজা জানান, বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রির কারণে আমদানিকারকরা কোনো লাভবান হচ্ছেন না। কারণ তারা আমদানি করা দরের সামান্য ব্যবধানে তুলে দিচ্ছেন পাইকারদের হাতে। পাইকারদের সিন্ডিকেটের কারণে ক্রেতাদের বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী জানান, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ব্যাপক হারে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। বাজার সহনশীল রাখতে ও পেঁয়াজের আমদানি গতিশীল করতে বেনাপোল বন্দর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দাম বাড়ার বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারে পড়ে না।
জামাল হোসেন/আরএআর/এমএস