৩ মাস ধরে নিখোঁজ ছেলের পথ চেয়ে আছেন মা
গত তিনমাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন কুষ্টিয়া শহরের পিয়ারাতলার বাসিন্দা নাছির উদ্দিনের ছেলে মো. আবদুল্লাহ (২৯)। সেই থেকে সন্তানের ফেরার প্রতীক্ষায় বসে আছেন মা। এ বুঝি তার ছেলে বাড়িতে ফিরে মা বলে ডাকবে। দীর্ঘ প্রায় ৩ মাস অতিবাহিত হলেও ছেলের সন্ধান না পেয়ে ভেঙে পড়েছেন মা মোছা. ইয়াছমিন জাহান। ছেলের ছবি নিয়ে বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন তিনি। একই অবস্থা বাবা নাছির উদ্দিন ও একমাত্র বোন মাকসুদার। এদিকে আব্দুল্লাহের সন্ধান চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার বাবা।
নিখোঁজ আব্দুল্লাহর বাবা নাছির উদ্দিন জানান, ছেলে নিখোঁজের সপ্তাহ খানেক আগে বাড়ির সামনে কে বা করা কাফনের কাপড় ফেলে রেখে যায়। আব্দুল্লাহর বাক প্রতিবন্ধী বড় ভায়ের হাতে একটি চিঠি ধরিয়ে দেয় পরিবারকে দেয়ার জন্য। চিঠিতে স্পষ্ট করে আমাকে ও আমার ছেলেকে হুমকী দিয়ে লেখা ছিল আমি যেন আমার বাড়ি ঘর বিক্রয় করে এখান থেকে চলে যাই। আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি তারা যেন বিষয়টি তদন্ত করে আমার ছেলের সন্ধান দেয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারী দুপুর ১২টায় শহরের পিয়ারাতলার বাসা থেকে বের হন আব্দুল্লাহ। বেলা ২টায় তার মা আব্দুল্লাহর সঙ্গে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন এক্ষুণিই বাসায় ফিরবেন। এরপর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। গত তিন মাসে তার কোনো খবর পায়নি পরিবার। এ ঘটনায় ৪ মার্চ নিখোঁজ আব্দুল্লাহর মা মোছা. ইয়াছমিন জাহান কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
সূত্র আরও জানায়, আব্দুল্লাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি চাকুরির পাশাপাশি কুষ্টিয়ায় জমি কেনা বেচার ব্যবসা শুরু করেন। এছাড়া আব্দুল্লাহের সঙ্গে শহরের উপজেলা রোডের বাসিন্দা এক স্কুলশিক্ষিকার সম্পর্ক ছিল।
আব্দুল্লাহর বোন মাকসুদা বলেন, সোহানী গুল নাহার লোবনা নামে এক মেয়ের সঙ্গে ভাইয়ার সম্পর্ক ছিল। আমি বারবার তাকে জিজ্ঞাসা করেছি তিনি আমার ভাইয়ের সম্পর্কে কিছু জানেন কিনা? তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। এবং ফোন দিলে বারবার শুধু আমাকে জিজ্ঞাসা করেন আমরা পুলিশকে জানিয়েছি কিনা।
এ বিষয়ে সোহানী গুল নাহার লোবনার সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আব্দুল্লাহর মা মোছা. ইয়াছমিন জাহান বলেন, আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই। আমার ছেলে জীবিত আছে কি না তাও জানি না। আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। এতো সাধারণ ডায়েরির ভেতর মনে রাখা কষ্টকর। তবে পরিবারের সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
আল-মামুন সাগর/আরএ/পিআর