জাল টেনে জিপিএ-৫ পেয়েও হতাশা কৃষ্ণের
আমি জাল টানার কাজ করে নিজে পড়াশোনা করেছি। বাবা মাছ বিক্রি করে। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী পানি উরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ নিয়ে পাস করেছি। আমার ইচ্ছে, বড় হয়ে ডাক্তার হব। মানুষের সেবা করব। কিন্তু বাবা গরীব হওয়ায় সে পর্যন্ত পৌঁছাতে পারব কি-না জানি না।
একদিকে সফলতার আনন্দ, অন্যদিকে হতাশা নিয়ে জাগো নিউজকে এসব কথা বলেন কৃষ্ণ বিশ্বাস।
কৃষ্ণের বাড়ি সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিকরগাছা থানার জগনন্দকাটি গ্রামে। বাড়ি যশোর জেলার মধ্যে পড়লেও বিদ্যালয়টি পড়েছে সাতক্ষীরা জেলার মধ্যে। বাবা হরি বিশ্বাস। পেশায় মাছ বিক্রেতা। কৃষ্ণ বিশ্বাস মাছের ঘের ও বিলে অন্যদের সঙ্গে জাল টেনে লেখাপড়া চালিয়েছে। লেখাপড়ার প্রতি প্রবল ইচ্ছা ও মেধার জন্য এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। তবে সফলতার সঙ্গে পাশ করেও চরম হতাশায় ভুগছে কৃষ্ণ বিশ্বাস।
স্বপ্ন চিকিৎসক হবে, মানুষের সেবা করবে। তবে বাবার আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় সে পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে কি-না সন্দেহ তার।
বাবা হরি বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, আমার ছেলে জিপিএ-৫ পেয়েছে। আমাদের ইচ্ছা ছেলেকে ডাক্তার বানানো। কিন্তু ছেলে পড়াশোনা করানোর জন্য সামর্থ্য আমার নেই। আমি মাছ বিক্রয় করি, তাতে যে টাকা হয় সেটা নিয়ে আমার সংসারই ভালো ভাবে চালানো সম্ভব হয় না। ভালো কলেজে পড়ানোর ইচ্ছে ছিল। তবে যদি কেউ সাহায্য করে তাহলে হয়তো পড়াতে পারব।
কলারোয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী পানিকাউরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোমিনুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, ছেলেটি অত্যন্ত মেধাবী। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছিল। এসএসসি পরীক্ষাতেও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশ নিয়ে পদার্থ বিজ্ঞান ছাড়া সব কয়টি বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছে। ওদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে আমি নিজেই খরচ দিয়ে লেখাপড়া করিয়েছি। কৃষ্ণের ইচ্ছা ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু তার বাবার লেখাপড়া চালানোর মতো কোনো সঙ্গতি নেই।
কৃষ্ণ বিশ্বাসকে সহযোগিতা করার জন্য ০১৭৭২৩১৬২৭৮ নম্বরে (কৃষ্ণের বাবা হরি বিশ্বাস) যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আকরামুল ইসলাম/এসআর/পিআর