এক দুর্ঘটনায় সব হারিয়েছেন তিনি
যে পা দুটির উপর ভর করে গাড়ির হেলপার হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন সেই পা হারিয়ে হুইল চেয়ারে বসে ভিক্ষা করেন পলিন ছৈয়াল (৩৮)। একটি দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে তার জীবনের সব স্বপ্ন। ভিক্ষা করে খেয়ে না খেয়ে জীবন চলে তার। কেউ তাকে একটু সাহায্য করলে ছোট কোনো ব্যবসা করে দু’বেলা খেতে পারতেন বলে আশা করেন তিনি।
২০১৫ সালে শরীয়তপুর থেকে যশোরে যাওয়ার সময় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে থাকা গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ডান পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পলিনের। অস্ত্রোপচার করে তার পা জোড়া লাগানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন চিকিৎসকরা। কোনো রকমে রক্ষা পায় বাম পা। তবে এক পায়ে আর দাঁড়াতে পারেননি পলিন। তাই হুইল চেয়ারে বসে ভিক্ষা করে সংসার চালান তিনি।
মৃত জলিল ছৈয়াল ও নুরজাহান বেগমের ছেলে পলিন ছৈয়াল। পলিনের বাড়ি শরীয়তপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ আটং গ্রামে। মহসিন নামে তার ১৩ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী একটি ছেলে ও মুনিয়া নামে ১১ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
পলিন ছৈয়াল জানান, ট্রাকে হেলপারের কাজ করে ভালোই সংসার চলতো। কিন্তু দুর্ঘটনার কোনো উপায় না পেয়ে ভিক্ষা করছেন তিনি। কোনো ব্যক্তি অথবা সরকার যদি ব্যবসা করতে কিছু টাকা দিত তাহলে আর ভিক্ষা করতে হতো না তাকে। মা, স্ত্রী ও সন্তানদের মুখে দু’বেলা দু’মুঠো ভাত তুলে দিতে পারতেন পলিন।
পলিনের স্ত্রী ময়না জানান, ঘটনার পর থেকে এখনও কেউ তাদের সাহায্যে এগিয়ে অাসেনি। সরকারও কোনো খোঁজখবর নেয়নি। এমনকি তার স্বামী যে ট্রাকে কাজ করতেন তার মালিকও কোনো সাহায্য করেনি। এখন সংসার চালাতে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে তাদের।
মো. ছগির হোসেন/এফএ/এমএস