নওগাঁয় সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ভুয়া দলিল রেজিস্ট্রির অভিযোগ
নওগাঁর রানীনগরে সাব-রেজিস্টার ও মুহুরী সাইদুল ইসলামের যোগসাজসে ভুয়া দলিল রেজিস্ট্রি অভিযোগ উঠেছে। গত ২৩ এপ্রিল (সোমবার) রানীনগর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে এ ঘটনা ঘটে। পরদিন মঙ্গলবার আবারও জমির মূল মালিককে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে জমির মূল মালিক ছাড়াই রেজিস্ট্রি হবে। জমির মালিকরা প্রতারণার শিকার হবেন। এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সপ্তাহে তিনদিন জমি রেজিষ্ট্রি হয়। উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মমতাজ হোসেনের (৭৬) ছেলে আক্তারুজ্জামান সাগর (৩৬)। একই উপজেলার করজগ্রাম গ্রামের আনিছুর রহমানকে আসল বাবা সাজিয়ে আক্তারুজ্জামান সাগর গত সোমবার প্রায় ১৯ বিঘা জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়। এ নিয়ে মুহুরি সাইদুল ইসলামের সঙ্গে আক্তারুজ্জামান সাগরের ৬০ হাজার টাকা চুক্তি হয়। জমি রেজিস্ট্রি দিনে ৪৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে বাকি টাকা সময় করে পরিশোধ করা হবে বলে মুহুরিকে জানিয়েছেন সাগর।
জমি রেজিষ্ট্রির সময় অপর এক মুহরি বিষয়টি বুঝতে পারেন, যে আনিছুর রহমানকে বাবা সাজিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করছেন সাগর। বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর গুঞ্জন শুরু হয়। পরদিন মঙ্গলবার মুহরি সাইদুল ইসলাম আবারও সাগরকে দাতা সাজিয়ে তার আসল বাবা মমতাজকে ফের রেজিস্ট্রি করে দেয়। আর এ কাজে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সাব-রেজিস্টার ও মুহুরি জড়িত রয়েছেন।
এলাকাবাসী অভিযোগ, যেখানে ভুয়া বাবা সাজিয়ে ভুয়া দলিল রেজিস্ট্রি হয়েছে। বিষয়টি প্রকাশের পর আবার ভুয়া দলিল মূলে কীভাবে জমি রেজিস্ট্রি করে জমির মূল মালিককে ফেরত দেয়া সম্ভব। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ দোষীদের শাস্তির জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে মুহরি সাইদুল ইসলাম বলেন, আমিতো এলাকার সব মানুষকে চিনি না। ওই লোকটি যে সাগরের বাবা নয়, তা আমার জানা ছিল না। জমি রেজিস্ট্রির সময় ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপিতে বুঝা যাচ্ছিল না। বিষয়টি জানার পরই সাব-রেজিস্ট্রারকে জানাই। তিনি আবার রেজিস্ট্রি করতে বলেন। একদিন পর আমি নিজ খরচে জমি রেজিস্ট্রি করে দেই।
রানীনগর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান বাচ্চু বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। ঘটনার সত্যটা উদঘাটন করতে হবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রানীনগর সাব-রেজিস্টার ইসমাঈল হোসেন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভুয়া কী অভুয়া এটা আমি ঠিক বলতে পারবো না। যদি দলিল হয়েই থাকে, তাহলে হয়েছে। দাতা-গ্রহীতা কারা এবং তাদের স্বার্থে কী হয়েছে না হয়েছে তারাই বলতে পারবে। এছাড়া এটি আদালত বলতে পারবেন। আর যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে মুহুরিকে শোকজ করা হবে এবং ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
আব্বাস আলী/আরএ/জেআইএম