ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

রাত-দিন মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে ছুটছেন তিনি

জেলা প্রতিনিধি | ঝালকাঠি | প্রকাশিত: ০২:০৫ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বার ডেলিভারির সময় হয়েছে। তাই ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে তাকে। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় রোগীর জন্ডিস ধরা পড়ে। প্রসব বেদনায় চিৎকার করছে। ডেলিভারি রোগীর জন্ডিস, এ রোগীকে চিকিৎসা দিতে ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. জোয়াহের আলী হিমশিম খাচ্ছেন। তাই রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে (শেবাচিম হাসপাতালে) পাঠানোর হয়। হাতে অল্প সময়, তাই দ্রুত সেখানে পৌঁছাতে হবে, তা না হলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ঘটনা শুনেই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. কাওছার আহমেদ মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে উপস্থিত।

jagonews24

রোগী নলছিটি উপজেলার নাঙ্গুলী গ্রামের মো. জামাল হাওলাদারের স্ত্রী জায়েদা আক্তার চাঁদনী। তার সঙ্গে ছিলেন মা, ভাই ও বোন। নার্সদের সহায়তায় তারা অ্যাম্বুলেন্সে রোগীকে তুলেন। খারাপ কিছু হওয়ার আগেই খুব অল্প সময়ের মধ্যে মুমূর্ষ রোগী চাঁদনীকে নিয়ে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পৌঁছান তিনি। এটি কোনো গল্প নয়। ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সোমবার দুপুরের বাস্তব চিত্র এটি। শুধু জায়েদা আক্তারই নন। এভাবে প্রতিদিন ২-৩ জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল নিতে হয় অ্যাম্বুলেন্স চালক কাওছার আহমেদকে। তিনি সাধারণ হয়েও কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।

এবার জেনে নেওয়া যাক অ্যাম্বুলেন্স চালক কাওছার আহমেকের পরিচয়, মাধ্যমিক উত্তীর্ণ কাওছার আহমেদ ২০১২ সালে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে গাড়ি চালক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি রাজাপুর উপজেলার চল্লিশ কাহনিয়া গ্রামের মো. হোসেন আলী হাওলাদারের ছেলে। আট ভাই বোনের মধ্যে তিনি ৬ নম্বরে। ব্যক্তিগত জীবনে কাওছার তিন সন্তানের জনক। তার স্ত্রীর প্রথম বারে জমজ দু’টি পুত্র সন্তান হয়। তাদের নাম রাখা হয় কামরুল ও মাইনুল। দু’জনেই ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র। ছোট সন্তান মীমের বয়স ৪ বছর। গাড়িচালক কাওছার আহমেদ জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের উপ-পরিচালকের গাড়ি চালক থেকে বদলী হয়ে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্সচালক হিসেবে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যোগদান করেন।

jagonews24

শুধু কাওছার আহমেদই নন এভাবে মানুষের জীবন বাঁচাতে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করেন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. আবু হানিফ ও মহসিন হোসেন।

রাত নেই দিন নেই, গোসল-খাওয়া-ঘুম নেই, পরিবারকে সময় না দিয়ে মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে কাজ করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে রোগীর স্বজনদের কল পাওয়ার পর কোনো কারণে আসতে ২ মিনিট দেরি হলেই অ্যাম্বুলেন্স চালকের বকা-ঝকা, তিরস্কার, ভর্ৎসনা, কটাক্ষ করেন। কিন্তু সেদিকে কর্ণপাত না করে রোগীকে গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালন করেন বলে জানান অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. আবু হানিফ।

jagonews24

মো.আতিকুর রহমান/আরএ/আরআইপি

আরও পড়ুন