মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদের সংসার চলে চা বিক্রি করে
ঝিনাইদহে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদ জব্বার। জীবন চলে তার চা বিক্রি করে। আব্দুর রশীদের বর্তমান বাড়ি ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ড উপজেলার মথুরাপুর গ্রামে। কোনো বেলা খায় তো কোনো বেলা খায় না।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বর্ণনা দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদ বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে দেশকে স্বাধীন করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি। পাকিস্তান আমলে আমি আনসার বাহিনীতে চাকরি পাই। চাকরির পর পরই আনসার ট্রেনিংয়ে চলে যাই, ট্রেনিং শেষে বাড়ি ফিরে ১৫ দিনের মাথায় চলে যাই মুক্তিযুদ্ধে। এরপর ভারত থেকে অস্ত্র আনি। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ, সেই সময় আমার কমান্ডার ছিলেন ভোলা ভাই।
মুক্তিযোদ্ধা রশীদ বলেন, পিয়ার পুরে পাকিস্তানি ক্যাম্পে হানা দেওয়ার সময় শহীদ হন ভোলা ভাই। তারপর আমি চলে যায় রতি ডাঙ্গার মোস্তফা ভাইয়ের সঙ্গে। এবং সেখান থেকে কমান্ডার মোস্তফা ভাইয়ের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। এর মধ্যে কমান্ডার জোহা ভাই এসে বলেছিলো কমান্ডার মোস্তফা ভাইকে, আমার এলাকায় আরও কিছু লোক লাগবে। কমান্ডারের নির্দেশে, জোহা ভাইয়ের সঙ্গে কুষ্টিয়ার গোবরা চাঁদপুর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে যোগদান করি। এবং পাক সেনার সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করা আমার সকল সনদ ১৯৮৭ সালে নিজ বাড়িতে আগুন লেগে পুড়ে যায়। এরপর থেকেই সবার দারেদারে ঘুরছি। ২০১৭ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাচাইয়ের নামের তালিকায় ইউএনও মহোদয়ের মাধ্যমে সকল ডকুমেন্ট পাঠিয়েছি ঢাকায়।
ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মহিউদ্দিন মাস্টার বলেন, যুদ্ধ চলাকালীন সময় ঝিনাইদহ সীমানা থেকে কুষ্টিয়া জেলা গোবরা চাঁদপুর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে যোগদান করেন। আব্দুর রশীদ জব্বার ছিলেন একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বলেন, জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন আব্দুর রহমান আব্দার। তার নেতৃত্বে আমরা হরিনাকুন্ডু উপজেলায় ২০৪ জন মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করেছিলাম।
ঝিনাইদহ বীর মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডার মকবুল হোসেন জানান, যাচাই বাচাইয়ের কাগজপত্র মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
আহমেদ নাসিম আনসারী/আরএ/আরএস