৩ হাজার টাকার ইনজেকশনে রোগীর মৃত্যু
নড়াইলে ডা. আব্দুল কাদের জসিমের অপচিকিৎসায় মাফিজুর শেখ (৩৫) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ওই রোগীকে ৩ হাজার টাকার ইনজেকশন দেয়ার পরই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান স্বজনরা।
মৃত মাফিজুর নড়াইলের কালিয়া উপজেলার আরাজী বাঁসগ্রামের ইসরাফিল শেখের ছেলে। সোমবার বিকেলে নড়াইল সদর হাসপাতালের ডা. আব্দুল কাদের জসিমের নিজস্ব চেম্বারে মাফিজুরকে নিয়ে আসেন তার স্ত্রী লাকছি বেগম।
লাকছি বেগম অভিযোগ করে বলেন, ডা. আব্দুল কাদের জসিমের চেম্বারে নেয়া মাত্রই রোগীকে দেখে ৩ হাজার টাকার একটি ইনজেকশন ও ৮ হাজার টাকার একটি পরীক্ষা করাতে বলেন।
এত টাকা নেই বলে লাকছি বেগম স্বামীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে চান। কিন্তু ডা. জসিম তাকে বলেন, দ্রুত পরীক্ষা করাতে হবে এবং ইনজেকশন দিতে হবে। তা না হলে রোগীর খুব বিপদ হবে। এসব কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন ডাক্তার জসিম।
এরপর রোগীকে ৩ হাজার টাকা দামের একটি ইনজেকশন দেন। ইনজেকশন দেয়ার পর রোগীর অবস্থা অবনতি হতে থাকে। রোগী মাফিজুর বার বার পানি পান করতে চাইলেও তাকে পানি খেতে দেয়া হয়নি। তার স্ত্রী অসুস্থ স্বামীর কাছে যেতে গেলে তাকে বাধা দেয়া হয়।
ডাক্তারের কর্মচারী স্বপ্না রানী নিহত মাফিজুরের স্ত্রী লাকছি বেগম বা অন্য কাউকে তার কাছে যেতে দেননি। একপর্যায়ে মারা যান মাফিজুর। মৃত্যুর পর স্ত্রীকে স্বামীর কাছে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। এরই মধ্যে মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে নানা ধরনের অপচেষ্টা চালান ডাক্তার আব্দুল কাদের জসিম।
তিনি এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী অনুগত ব্যক্তিকে ডেকে নিয়ে আসেন। তারা এসে নিহত রোগীর স্বজনদের নানাভাবে প্রলোভন এবং হুমকি দিয়ে এ বিষয়ে নীরব থাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এমনকি রোগীর হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে বলতে বাধ্য করে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে নিহতের মরদেহ বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফন করা হয়।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. আছাদ উজ জামান মুন্সি বলেন, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে নাকি হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে সেটা ময়নাতদন্ত না করলে বোঝা যাবে না। পুলিশ মরদেহ আমাদের কাছে পাঠালে ময়নাতদন্ত করা হবে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে মৃতব্যক্তির বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু মৃতের স্ত্রী ও স্বজনরা মামলা করতে চান না। তাই কাউকে আটক করা হয়নি।
হাফিজুল নিলু/এএম/এমএস