ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ডাক্তার বলে কথা

জেলা প্রতিনিধি | কক্সবাজার | প্রকাশিত: ০৩:৩১ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

আগুনে আটকেপড়া প্রতিবেশীদের রক্ষা করতে গিয়ে হাত ও থুতনিতে আঘাত পেয়েছিলেন কলাতলীর হাসান মাহমুদ (৩৬)। তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আনেন স্বজনরা।

জরুরি বিভাগের চিকিৎসার পর সার্জারি ওয়ার্ডে গেলে ইন্টার্ন চিকিৎসক ফেনীর দাগনভূঁইয়া’র কৈ’খালী গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে শাফায়েত হোসেন আরাফাত (২৫) ও বাগেরহাটের কাপড়পুড়ার পাইক আলাউদ্দিনের ছেলে তওহীদ ইবনে আলাউদ্দিনের (২৫) সঙ্গে হাসানের স্বজনদের কলহ হয়।

এ জেলার খবর আরও পড়ুন : এবার কক্সবাজারে রিকশাচালকের পা বিচ্ছিন্ন

গত ১৭ এপ্রিলের এ ঘটনায় রোগী ও তার স্বজনের হামলায় দুজনেই আহত হওয়ার অভিযোগে সেদিনই কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শাহীন মো. আবদুর রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে একজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

সদর থানার ৪৭ নম্বর সেই মামলার জখমী সনদ ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদর থানায় জমা দেয় কক্সবাজার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ জেলার খবর আরও পড়ুন : ধর্ষণের আলামত মেলেনি, দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে সুদীপ্তার

২৪ ঘণ্টায় এমন জখমি সনদ দেয়ার ঘটনা বিরল ও নজিরবিহীন বলে দাবি করেছেন পুলিশ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের এসআই মনির হোসেন বলেন, ঘটনার পরদিনই কক্সবাজার সদর হাসপাতালের দুই শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের জখমি সনদ পেয়েছি। ওই সনদ তারপর দিন আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এ জেলার খবর আরও পড়ুন : স্ত্রীর পরকীয়ায় স্বামীর করুণ পরিণতি

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জখমি সনদ বোর্ডের সভাপতি ডা. মো. আলী এহসান, বোর্ডের সদস্য ডা. জামশেদ গিয়াস উদ্দিন ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. আশিকুর রহমান স্বাক্ষরিত সেই প্রতিবদন অনুযায়ী আরাফাত ভারি ভোতা অস্ত্রের আঘাতে গুরুত্বর আহত ও ভোতা অস্ত্রের আঘাতে আলাউদ্দিন সামন্য আহত হয়েছেন।

বিষয়টিকে এক আইনের দ্বিমুখী প্রয়োগ দাবি করে কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দিন বলেন, তারা চিকিৎসক বলেই ২৪ ঘণ্টায় জখমি সনদ থানা পুলিশের হাতে পৌঁছেছে। কিন্তু জনগণের বেলায় আবেদনের পর আবেদন করে, দ্বারে দ্বারে ঘুরেও তিন থেকে ছয় মাসেও সনদ পাওয়া যায় না।

এ জেলার খবর আরও পড়ুন : চিকিৎসা নিতে গিয়ে কারাগারে রোগী

এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, ২৪ ঘণ্টায় জখমি সনদ সরবরাহের ঘটনা বিরল ও নজিরবিহীন। আমার চাকরি জীবনে এতো দ্রুত জখমি সনদ পাওয়ার ঘটনা আগে ঘটেনি। একটি মামলার জখমি সনদ তদন্ত কর্মকর্তা বারবার আবেদন করেও সঠিক সময়ে পান না। অথচ ডাক্তারই ভিকটিম হওয়ায় ঘটনার পরদিনই সনদ সরবরাহ দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

jagonews24

তিনি আরও বলেন, সনদ দিতে সময়ের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে যত দ্রুত দেবে একটি মামলা নিষ্পত্তিও তত দ্রুত হবে। অনেকক্ষেত্রে পুলিশ শুধু সনদের জন্য মামলার অভিযোগ পত্র কিংবা চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দিতে পারে না।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)'র কক্সবাজার জেলা কমিটির সভাপতি এম এ বারী বলেন, একদিনে কোনো সনদ দেয়ার নজির এবারই প্রথম দেখলাম। তবে এটি সাধারণ মানুষের জন্যও চালু রাখা হলে এমন ঘটনাকে সাধুবাদ জানাবো।

এ জেলার খবর আরও পড়ুন : সাজা ছাড়াই বছরের পর বছর কারান্তরীণ ওরা ১৪ জন

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শাহীন মো. আব্দুর রহমান বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আমরা জরুরিভিত্তিতে জখমি সনদ দিয়ে থাকি। এক্ষেত্রেও এমন ঘটেছে।

সাধারণ মানুষের মাসের পর মাস ভোগান্তির বিষয়টি তুলে ধরা হলে তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আগ্রহের ওপরই নির্ভর করে সনদ পাওয়ার।

আপনার দায়ের করা মামলার আইওতো আবেদনই করেননি সনদের তাহলে তা এত দ্রুত সরবরাহ হলো কেমন করে, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- আসলে যেদিন সনদ দেয়া হয়েছে সেদিন আমি ছুটিতে ছিলাম। কারা কীভাবে তা সরবরাহ করেছে তা বলতে পারবো না।

বিষয়টি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. আবদুস সালাম বলেন, জখমি সনদ মানে চিকিৎসায় একজন জখমি রোগীকে টিট্টমেন্ট দেয়াকালীন কেমন পাওয়া গেছে তা উল্লেখ করে লিখিত দেয়া। সেটা যখন চিকিৎসা করানো হয় এরপরই দেয়া যায়। কিন্তু আমাদের দেশে সাধারণ মানুষকে ভোগাতে অনেক সময় সময়ক্ষেপণ করা হয়।

তবে ১৮ এপ্রিল কক্সবাজার সদর হাসপাতালের দেয়া জখমি সনদ সম্পর্কে তিনি বলেন, সমগোত্রীয়দের সব জায়গায় একটু প্রায়োরিটি দেয়া হয় এটি এমনই একটি ঘটনা।

সায়ীদ আলমগীর/এমএএস/আরআইপি