নওগাঁয় ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত
নওগাঁয় ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। শহরের তুলনায় গ্রামে লোডশেডিংয়ের পরিমাণটা বেশি। পল্লী বিদ্যুতে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। একেতো গরমের দিন, তার ওপরে বিদ্যুতের লোডশেডিং। এদুইয়ে মিলে অসুস্থ হয়ে পড়ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। এছাড়া সেচ কাজে পানি সরবরাহে বিঘ্ন হচ্ছে। এদিকে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় অফিস আদালত, শিল্পকারখানা কাজের বিঘ্নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার ও ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। কোনো ধরনের সমস্যা নেই।
প্রযুক্তির এ সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় জনজীবন প্রায় স্থবিব। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) দাবি করছেন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু দিনে প্রায় ২ থেকে ৩ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। অপরদিকে পল্লী বিদ্যুতের আওতায় বিশেষ করে গ্রামের দিকে বিদ্যুৎ থাকছে না। ফলে কৃষি কাজে সেচ পাম্পে ঠিক মতো বিদ্যুৎ পাচ্ছে না।
বৈশাখে এসময় প্রচণ্ড গরম। ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। অপরদিকে সন্ধ্যার সময় বিদ্যুৎ না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার সমস্যা হচ্ছে।
মেসার্স ফারিহা চালকলের মালিক শেখ ফরিদ উদ্দিন বলেন, দিনে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। সারাদিন বিদ্যুৎ থাকলে প্রায় ১০ টন করে চাল উৎপাদন করা হয়। কিন্তু এখন বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়ায় দিনে ৫ থেকে ৬ টনের মতো চাল উৎপাদন হচ্ছে। এতে করে শ্রমিক খরচ বেশি এবং চাল উৎপাদনেও খরচ বেশি হচ্ছে।
বদলগাছী উপজেলার বৈকণ্ঠপুর গ্রামের শাকিল নেওয়াজ বলেন, এ সময় (ফাল্গুন ও চৈত্র মাস) বোরে ধান ক্ষেতে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা ও সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে সেচ কাজে ব্যাপক বিঘ্ন হচ্ছে। এছাড়া ঝড় বৃষ্টি হলে দুইদিন আর বিদ্যুৎ থাকে না।
নওগাঁ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আবাসিক প্রকৌশলী রুহুল করিম বলেন, নওগাঁ জেলায় পিডিবির বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি নেই। যেটুকু সমস্যা হয় সেটা যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে। পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং আছে। জেলায় পিডিবির বিদ্যুৎ চাহিদা ২৫ মেগাওয়ার্ট এবং গ্রিড থেকে চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।
নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রিজিয়ন-১ এর জেনালে ম্যানেজার (জিএম) এনামুল হক বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ রিজিয়ন-১ (নওগাঁ সদর, আত্রাই, রানীনগর, মান্দা, নিয়ামতপুর ও বদলগাছী উপজেলা) এর সর্বমোট বিদ্যুতের চাহিদা ৭৫ মেগাওয়ার্ট। গ্রিড থেকে পাওয়া যায় ৪৫ মেগাওয়ার্ট। আর বাকি ৩০ মেগাওয়ার্ট বিভিন্নভাবে লোডশেডিং করে সমন্বয় করে দেয়া হয়। গ্রিড থেকে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ পাওয়া গেলে কোন রকম লোডশেডিং হবে না।
নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রিজিয়ন-২ পত্নীতলা ডিজিএম ফকরুল আলম বলেন, পত্নীতলায়-২ (পত্নীতলা, মহাদেবপুর, ধামইরহাট, সাপাহার ও পোরশা উপজেলায়) সর্বমোট বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ মেগাওয়ার্ট। গ্রিড থেকে পাওয়া যায় ১১ মেগাওয়ার্ট। আর বাকি ৪ মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ লোডশেডিং করে চালানো হয়।
আব্বাস আলী/আরএ/পিআর