পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস সরাতে প্রশাসনের অভিযান
নিজেদের প্রয়োজনে কেটে ক্ষত-বিক্ষত করা প্রকৃতি প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠছে। পাদদেশ কেটে ভিত্তি নরম করে দেয়ায় আবাসন দুমড়ে-মুছড়ে দিয়ে তাজা প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে পাহাড়। কক্সবাজার হিলটপ সার্কিট হাউস সংলগ্ন রাড়ার স্টেশন পাহাড় ধসে পাঁচ জনের প্রাণহানির পর থেকে জান-মাল রক্ষার্থে মাঠে নেমেছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার সকাল থেকে শহরের দরিয়া নগর, বিডিআর ক্যাম্প, দক্ষিণ ডিককূলসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের কিনারে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস সরাতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানা যায়, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে পৌরসভার বাইরের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদফতর, কক্সবাজার অঞ্চলের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমদ হোসেন, সহকারি ভূমি কর্মকর্তা শাহেদুল ইসলাম, হাবিলদার মোস্তফার নেতৃত্বে বিজিবি টিম ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনিকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযানে অংশ নিয়েছে।
পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার অঞ্চলের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম জানান, অসংখ্য প্রাণহানি ও মামলার পরও এখানকার মানুষের বোধদয় হচ্ছে না। ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা দেখা দিলেই প্রাণহানি রোধে পাহাড়ের পাদদেশ কিংবা উপরে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস থেকে সরে আসতে প্রশাসন মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করে। কিন্তু মৃত্যুও তাদের এ ঝুঁকির স্থান থেকে সরাতে পারে না। তাই এ অভিযান চালানো হচ্ছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক ও উন্নয়ন) ড. অনুপম সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নেয়ার কাজ অব্যহত রেখেছে জেলা প্রশাসন। এসব লোকজনের জন্য কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। শহরে পৃথক তিনটি টিম বিভন্নস্থানে অভিযানে অংশ নিচ্ছে।
উল্লেখ্য, জিওলজিক্যাল সার্ভে অব বাংলাদেশ এক বিবরনীতে সম্প্রতি প্রচার করে প্রবল বর্ষণে কক্সবাজার, টেকনাফ ও চট্টগ্রামে যেকোনো সময় ভূমিধস হতে পারে। এ খবর পেয়ে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষে থেকে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্ব একটি টিম তাদের নিরাপদে সরে যেতে অনুরোধ করে।
রাত পার না হতেই পরদিন সোমবার শহরের দক্ষিণ বাহাছরা কবরস্থান পাড়ায় পাহাড়ের মাটি চাপায় মা-মেয়ে, স্বামী-স্ত্রীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
সায়ীদ আলমগীর/এআরএ/পিআর